চুল নিয়ে মোটামুটি আমরা প্রত্যেকেই অনেক বেশি সৌখিন। চুলের স্টাইলে আমরা অনেকেই অনেক ভাবেই টাকা খরচ করে থাকি। তবে চুলের প্রশ্নে খুশকি আমাদের জন্য অভিশাপ স্বরূপ।খুশকি সমস্যায় ভুগছেন না এরকম মানুষ বলতে গেলে খুব কমই পাওয়া যাবে। অনেক রকমের কেমিক্যাল, শ্যাম্পু ইত্যাদি ব্যবহারের পরেও আমাদের খুশকি যাচ্ছে না।
তাহলে খুশকি নিরাময় এর কি কোন উপায় নেই?
অবশ্যই আছে বন্ধুরা। আর ঠিক সেই উপায় গুলো নিয়েই আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক কিভাবে অতি সহজে খুশকি থেকে রেহাই পাবার উপায়গুলো ।
★ খুশকি কি এবং কেন হয়?
খুশকি অতি পরিচিত একটি চর্মরোগ। যদিও আমরা অনেকেই জানি না এটি একটি রোগ। জিটি সাধারণত মাথার খুলির তকে হয়ে থাকে। বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার কারণেও এ রোগটি হতে পারে।
খুশকি কেন হয়?
মাথার খুলির ত্বকে ছত্রাক বা ইস্ট জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হলে।
তেলগ্রন্থি থেকে ত্বকের তৈলাক্ত উপাদান বেশি পরিমাণে বের হলে।
অনেক সময় জিনগত বা বংশগত কারণেও খুশকি হয়ে থাকে।
★★ অতি সহজে খুশকি দূর করার কার্যকরী উপায় সমূহঃ
ঘৃতকুমারীঃ
ঘৃতকুমারী বা এলোভেরা খুশকি দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। খুশকিযুক্ত মাথায় ঘৃতকুমারীর রস ভালোভাবে মালিশ করে নিয়ে অপেক্ষা করুন। এবং ঘন্টাখানেক পর ধুয়ে নিন। এর ফলে খুশকির জন্য যে চুলকানি হত সেটি থেকেও রেহাই পাবেন।
লবণঃ
শ্যাম্পু ব্যবহারের পূর্বে অল্প করে মাথায় লবন রেখে দিলে আপনি শ্যামপুর সম্পূর্ণ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন এবং এর ফলে আপনার মাথায় খুশকির উপদ্রব অনেকটাই কমে যাবে।
মেথি তেলঃ
সাধারণ নারিকেল তেলের সাথে মেথি তেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে। খুশকি অনেকটাই নিরাময় হবে এবং চুল থাকবে সুন্দর।
লেবুর রসঃ
খুশকি দূর করতে লেবুর রস অত্যন্ত কার্যকরী। প্রথমে লেবুর রস আপনার মাথার চুলের গোড়ায় দিয়ে ভালোভাবে মালিশ করে নিন। এবং অল্প কিছু পানি নিয়ে ওখানে লেবুর রস মিশিয়ে পুনরায় ওই পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন।
অলিভ অয়েলঃ
ত্বক শুষ্ক হলে গোসলের পূর্বে কমপক্ষে 2 ঘন্টা পূর্বে অথবা রাতে শোবার আগে অলিভ অয়েল দিয়ে নিন। এবং শ্যাম্পু করে নিন।
শ্যাম্পুঃ
বর্তমানে ব্যবহৃত শ্যাম্পু দিয়ে যদি খুশকি সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে খুশকি নাশক শ্যাম্পু গুলো ব্যবহার করুন।
চায়ের লিকারঃ
চায়ের লিকার ঠান্ডা করে নিয়ে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় ভালভাবে লাগিয়ে দিন এবং ঘণ্টাখানেক পর ধুয়ে নিন। এটি খুশকি দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী।
টক দইঃ
খুশকি দূর করতে টকদই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এককাপ টকদই এর সাথে অল্প পরিমাণ পানি মিশিয়ে মাথায় দিন এবং 30 মিনিট পরে শ্যাম্পু করে নিন।
নিম পাতাঃ
দু’মুঠো নিম পাতা একটি পাত্রের পানিতে নিয়ে ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিন। তারপর নিম পাতা গুলো ছেঁকে নিয়ে পানি গুলো দিয়ে মাথা পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
আমলকি পাউডারঃ
আমলকি পাউডার এর পরিমান মতো পানি মিশিয়ে মাথার খুলিতে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে দিয়ে দিন এবং একঘন্টা পরে শ্যাম্পু করে নিন।
মেহেদীঃ
চুলের গোড়ায় সরাসরি মেহেদি ব্যবহারের পরিবর্তে মেহেদির রস ব্যবহার করুন কারণ মেহেদির জমে থাকা অংশ খুশকির কারণ হতে পারে।
মাথায় স্কার্ফ ব্যবহারঃ
বাইরের ধূলোবালি থেকে নিজের মাথার ত্বককে খুশকি হতে রক্ষা করার জন্য বাইরে বেরোনোর পূর্বে টুপি ক্যাপ অথবা স্কার্ফ ব্যবহার করুন।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনঃ
খুশকি দূর করতে খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তেল এবং অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করুন। সবুজ শাকসবজি আপনার ত্বকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
★★অতি সহজ উপায়ে খুশকি দূর করতে নিন্মলিখিত বিষয় মেনে চলুনঃ
মাথার ত্বক সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন।
চুলে কালার করলে লেবুর রস এবং টক দই ব্যবহারে বিরত থাকুন।
মাথার ত্বকে কখনো ময়লা জমে থাকতে দিবেন না।
প্রয়োজন অনুযায়ী তেল ব্যবহার করুন।
খুশকি হলে চুলের চিরুনি ব্রাশ এবং বালিশের কাভার সব সময় পরিষ্কার রাখবেন
অন্যের ব্রাশ বা চিরুনি ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।
অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে ও খুশকি হয় সুতরাং কোন বিষয়ে অতিরিক্ত মানসিক চাপ নেবেন না।
নিয়মিত শ্যাম্পু করুন এবং আপনার ত্বকের ধরন বুঝে শ্যামপু নির্বাচন করুন।
ভেজা চুল জলদি শুকিয়ে নেয়া।
খুশকির কারণে আমরা রীতিমতো বিড়ম্বনার শিকার হয়। যা আমাদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় । উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিসমূহ খুশকি দূর করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কার্যকরী। তাই খুশকি দূর করতে উপরোক্ত পদ্ধতি সমূহ মেনে চলুন এবং অতি সহজে খুশকি সম্পূর্ণভাবে দূর করুন।
ধন্যবাদ