চারকোল বা কয়লা কে না চেনে? দাঁত সাদা করার জন্য দাদি-নানিদের ছোটবেলায় দেখতাম কয়লা দিয়ে দাঁত মাজতে। ত্বকের যত্নে ও চারকোল ব্যবহার করা হচ্ছে। আপনি জানেন কি কয়লা এখন সৌন্দর্যচর্চার কাজেও ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। জ্বি হ্যাঁ কথায় আছে কয়লা ধুলে ময়লা যায়না তবে ত্বকের যত্ন ঠিক ই নিয়ে থাকে। বর্তমানে সারা বিশ্বে বিভিন্ন স্কিনকেয়ার সামগ্রীতে মূল উপাদান হিসেবে কয়লাকে যুক্ত করা হয়েছে। যে কোন জৈব পদার্থ(যা একসময় জীবিত ছিল) পুড়িয়ে কয়লা বানানো যায়।ত্বকের যত্ন নিতে কয়লা বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। এই কয়লা কাঠ, নারিকেলের ছোবড়া কিংবা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ও পাওয়া যায়।
কয়লা নিয়ে জরুরি কিছু কথা–
কয়লার উৎস যেটাই হোক, একে অ্যাক্টিভেটেড বা সক্রিয় কার্বন তখনই বলা যাবে যখন অনেক উচ্চতাপে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে এর অভ্যন্তরীণ অবস্থার পরিবর্তন ঘটানো হয়। অ্যাক্টিভেটেড চারকোল বা অ্যাক্টিভেটেড কার্বন বলতে একই জিনিস বোঝায়।
যেহেতু ত্বকের যত্নে কয়লা ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে সেহেতু আজ আমরা জেনে নেব কয়লা কিছু সাধারণ ব্যবহার–
আমরা মেয়েরা হলাম সৌন্দর্যপিপাসু। ত্বকের যত্ন নিতে কত কিছুই না ব্যবহার করি। তবে অনেকে আছেন ক্যামিকেল নির্ভর অনেকে আছেন ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে চান। তাই ত্বকের যত্নে ঘরোয়াভাবে কয়লার কিছু প্যাক বানাবো। যেখানে প্রধান উপকরণ থাকবে চারকোল।
ব্রণের সমস্য সমাধানে চারকোল–
- ত্বকের যত্নে বর্তমান সময়ে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ব্রণ। ব্রণ নেই এরকম মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। ছেলে কিংবা মেয়ে সকলেই এই ব্রণের সমস্যার সম্মুখীন হোন। আর ত্বকের যত্ন নেয়ার পরেও যখন ত্বকে এই ব্রণ দেখা দেয় তখন সকল রূপচর্চাকে বৃথা মনে হয়। আর ত্বকের এই সমস্যা সমাধানে সাহায্য করবে চারকোল। অ্যাক্টভেটেড চারকোল আমাদের মুখের ময়লা পরিষ্কার করে আমাদের ত্বকে ব্রণ হওয়া থেকে বিরত রাখে।।।।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- দুই টেবিল চামচ চিনি
- এক টেবিল চামচ জলপাই তেল
- এক টেবিল চামচ অ্যাক্টিভেটের চারকোল
এই তিনটি উপকরণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার মুখ হাল্কা ভাবে ভিজিয়ে এই মিশ্রণ টি ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। তারপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।।।।
তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা সমাধানে চারকোল–
- বর্তমানে ত্বকের বিভিন্ন সংক্রমনাধির জন্যে তৈলাক্ত ত্বক বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ত্বক চিটচিটে, পোরস, একনি বা পিম্পলস এই সকল সমস্যা লেগেই থাকে। আর ত্বকের যত্নে এই সমস্যা গুলো বিরাট বাধা। আর এই বাধা কে পেড়িয়ে ত্বকের যত্ন নিতে ধারুণ সাহায্য করে অ্যাক্টিভেটেড চারকোল।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- আপনার প্রতিদিনের ফেসওয়াস
- এক চিমটি চারকোল পাউডার
এই ২টি উপাদান একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। আমারা সাধারণত ফেসওয়াস ত্বক ক্লিঞ্জার হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। অই ফেসওয়াসের সাথে চারকোল মিশিয়ে দিলে আমাদের ত্বকের ক্লিঞ্জার হিসেবে দারুণ কাজ করবে। এবং এর সাথে বাইরের ধুলাবালি আর ময়লা আমাদের ত্বকে যে আস্তরণ তৈরি করে তা ও দূর করে।।।
বয়সের ছাপ দূর করতে চারকোল–
- বয়সের সাথে আমাদের তারুণ্যভাব হ্রাস পেতে থাকে। কিন্তু আগেরকালের দাদী নানীদের সাথে তুলনা করলে দেখা যাবে তাদের ত্বক এখনো অনেক উজ্জ্বল আর আমাদের ত্বক বয়সের আগেই ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে। এই তারুণ্যভাব ধরে রাখতে চারকোল বিশেষভাবে সাহায্য করে। অ্যাক্টিভেটেড চারকোলের মাস্ক আমাদের তারুণ্যভাব ধরে রাখে।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- একটি ডিমের সাদা অংশ
- লেবুর রস
- ২টি চারকোলের ক্যাপসুল
প্রথমে একটি ডিমের সাদা অংশ নিন। এতে এবার লেবুর রস ও চারকোল ক্যাপসুল নিয়ে মিশিয়ে নিন। একসাথে মিশিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। এইবার ২০ মিনিট রেখে দিয়ে মুখ ভালভাবে ধুয়ে নিন। দেখবেন মুখের ত্বক অনেক উজ্জ্বল ও লাবণ্যময়ী হবে।
সাবধানতা– অনেকের ত্বকে এলার্জি সমস্যা থাকতে পারে। যার ফলে ত্বকে সব ধরণের উপাদান ব্যবহার নাও করা যেতে পারে। তাই আগে যাচাই করে নিবেন কোন উপাদান টি আপনার ত্বকের সাথে মিশে যাচ্ছে।
উপরে আমরা চারকোলের ব্যবহার জানলাম। তবে জানলেই হবে না ত্বকের যত্নে ব্যবহার ও করতে হবে। নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিন। সুস্থ সুন্দর উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী হোন।