শুষ্ক ত্বকের জন্য কার্যকরী কিছু অ্যালোভেরার ফেসপ্যাক

নিজেদের ত্বকের শুষ্ক ভাব নিয়ে আমরা কমবেশি সকলেই চিন্তিত।কারও ত্বকের ধরনটাই শুষ্ক। শীতের শুষ্ক ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় সেই শুষ্কতা আরও বাড়ে। ত্বক খুব বেশি শুষ্ক হয়ে পড়লে ফেটে যায়, চুলকায়, ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে আমরা কতই না রূপচর্চার ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এরপরেও ত্বকের রুক্ষতা যেন দূর হতে চাইনা। তাই বন্ধুরা আজকের আলোচনাটি সাজিয়েছি। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক ব্যবহারের মাধ্যমে কিভাবে আপনার শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিবেন তার বিস্তারিত বর্ণনা নিয়ে।

★★শুষ্ক ত্বক ধারণাটা কিঃ

শুষ্ক ত্বকের প্রতি যত্নবান হতে হলে আপনাকে আগে শুষ্ক ত্বক বিষয়টা কি সেটা জানতে হবে।। নিচে শুষ্ক ত্বকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লিপিবদ্ধ করা হলোঃ

★ ত্বকে লালচে আভা দেখা যাবে।

★কিছু বলি রেখা ফুটে উঠবে।

★ ত্বক ফেটে যায়।

★ চামড়া উঠে যায়।

★চুলকায়, জ্বালাপোড়া করে।

★ ত্বকে ছোট ছোট দাগ দেখা যায়।

★★ ত্বক শুষ্ক হওয়ার বিভিন্ন কারণ

★ মানব দেহের হরমোন অথবা বয়সের কারণে।

★আবহাওয়ার পরিবর্তন।

★ বংশগত কারণ।

★ অতিরিক্ত ওষুধ সেবন।

★ অসচেতন খাদ্যাভ্যাস, ইত্যাদি।

শুষ্ক ত্বকের জন্য এলোভেরা কার্যকরী কিছু ফেইসপ্যাকঃ

শুষ্ক ত্বকের যত্ন নেবার জন্য আপনাদের সাথে এলোভেরার যে প্যাকগুলো ব্যবহার করছি এর থেকে আপনারা আপনাদের পছন্দমত ফেসপ্যাক ব্যবহার করুণ ।

শুষ্ক ত্বকের যত্নে এলোভেরা ফেসপ্যাক তৈরির পদ্ধতিঃ

প্যাক ১ঃ

অ্যালোভেরা ও নিমপাতাঃ

ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে এবং ত্বকের প্রদাহ কমাতে এলোভেরা এবং নিমপাতার মিশ্রণ অত্যন্ত কার্যকরী।

2 চা চামচ অ্যালোভেরার রস এর সাথে 2 চা-চামচ নিম পাতার রস গুলিয়ে ফেইস প্যাকটি তৈরি করে নিন। ব্যবহারের পূর্বে আপনার মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। এবং মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ভালোভাবে স্ক্রাব করে নিন। মিশ্রণটি সম্পূর্ণভাবে শুকানোর সময় দিন 15 থেকে 20 মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

শুষ্ক ত্বকে ফেসপ্যাক টি ব্যবহারের উপকারিতাঃ

★ ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখে।

★ শুষ্ক ভাব দূরীভূত করে।

★ ত্বকের প্রদাহ কমায়।

কাজেই শুষ্ক ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে রেস্পেক্ট এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

প্যাক ২ঃ

অ্যালোভেরা, লেবু এবং টমেটোঃ

ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে লেবু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে যাঁদের ত্বক শুষ্ক তার পাশাপাশি সেনসেটিভ তারা সরাসরি লেবুর রস এর পরিবর্তে  টমেটোর রস ব্যবহার করতে পারেন।

৪ চা-চামচ অ্যালোভেরার রস ১ চা চামচ লেবুর রস বা টমেটোর রস পরিষ্কার কোন পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে  মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন।

তারপর তোলা বা মুখের ব্রাশ ব্যবহার করে মিশ্রণটি আপনার মুখে লাগান। কিছু সময় ধরে মিশ্রণটি ভালোভাবে আপনার মুখে মালিশ করুন।শুকানোর জন্য 15 থেকে 20 মিনিট সময় দিন। এবং সম্পূর্ণভাবে শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।

অ্যালোভেরার এই ফেসপ্যাকটি আপনার শুষ্ক ত্বকে যে প্রভাব ফেলবেঃ

★ এলোভেরায় বিদ্যমান এন্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের ব্রণ এবং চুলকানি দূর করে।

★এটি ব্যবহারের ফলে আপনার মুখের আদ্রতা বজায় থাকে ফলে শুষ্কতা দূরীভূত হয়।

★ ত্বকের ফেটে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।

★ এবং আপনার ত্বকের চকচকে ভাব ফিরিয়ে আনে।

প্যাক ৩ঃ

অ্যালোভেরা, গোলাপ জল এবং বাদামের গুঁড়োঃ

2 চা চামচ অ্যালোভেরার রস,একটা চামচ বাদামের গুঁড়ো এবং এক চা চামচ গোলাপজল মিশিয়ে তৈরি করে নিন শুষ্ক ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক।

উপরে উল্লেখিত ব্যবহার পদ্ধতি অনুসরণ করে ফেস প্যাক টি ব্যবহার করবেন। এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিবেন।

★★অ্যালোভেরার ফেসপ্যাক ব্যবহারের গুরুত্বঃ

★ এই মিশ্রণটি আপনার শুষ্ক ত্বককে অধিকতর মশ্চারাইজ করবে।

★ আপনার ত্বকের গভীরে গিয়ে ব্লাড সেল এ শক্তি যোগাবে।

★ ত্বককে আদ্র করে ত্বকের রুক্ষতা দূর করবে।

★ ত্বকের চুলকানি দূর করবে।

★ ত্বককে করে তুলবে অধিকতর কোমল এবং সজীব।

শুষ্ক ত্বকের বিড়ম্বনা থেকে নিজেকে দূরীভূত করতে চাইলে আমাদের ফেসপ্যাক গুলো ব্যবহার করোন।

অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক তৈরিতে কিছু বিধিনিষেধঃ

★অপ্রাপ্তবয়স্কদের ত্বকে এলোভেরার ব্যবহার করবেন না।

★আপনার ত্বকে অ্যালার্জি জনিত সমস্যা থাকলে সরাসরি ফেসপ্যাক মুখে ব্যবহার না করে হাতে কিংবা অন্য যে কোন জায়গায় ব্যবহার করে দেখুন।

★ অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর রোদে বা গরম জায়গায় যাবেন না।

এছাড়াও শুষ্ক ত্বকের যত্নের জন্য অলিভ অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন। স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত সময় নিয়ে গোসল করবেন না।

সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি আমাদের ফেসপ্যাক গুলো ঘরে বসেই ব্যবহার করে দেখুন। এবং আপনার ত্বককে করে তুলুন মসৃণ, সুন্দর, সুস্থ এবং সজীব।