কফি অত্যন্ত সুস্বাদু একটি পানীয় হিসেবে আমাদের সকলের কাছে পরিচিত। কিন্তু রূপচর্চায় ত্বকের যত্নে কফি যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো আমাদের অনেকেরই অজানা। অবাক হওয়ার কিছুই নেই বন্ধুরা । কফিতে বিদ্যমান উপাদান আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী।ত্বকের যত্নে কফি পাউডার এর অনন্য গুণের কারণে রূপচর্চায় তাই দিন দিন এর জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি দ্রুত সময়ে আমাদের ত্বক কে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। তাই আপনারা যারা সম্পূর্ণ। ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নিতে চান তাদের জন্য শেয়ার করছি কফি দিয়ে তৈরি অত্যন্ত কার্যকরী দুটো ফেসপ্যাক। যা ব্যবহারের রাতারাতি আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়ে উঠবে সম্পূর্ন পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন ভাবে।তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক দ্রুত সময়ে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ফর্সা এবং দাগহীন ত্বক পেতে কফি পাউডার এর অত্যন্ত কার্যকরী দুটি ফেসপ্যাক।
অতিমাত্রায় উজ্জল ও ফর্সা ত্বক পেতে কফি পাউডার এর কফির ফেসপ্যাক সমূহঃ
কফি এবং বেসনের ফেইস প্যাকঃ
উপকরন সমুহঃ
1 চা চামচ কফি পাউডার।
1 চা চামচ বেসন।
1 চা চামচ মসুর ডালের গুঁড়ো।
1 চা চামচ মধু।
পরিমাণ মতো কাঁচা তরল দুধ।
ত্বকের যত্নে কফির ফেসপ্যাক তৈরীর প্রক্রিয়াঃ
1 চা চামচ মসুর ডাল দুই থেকে তিন ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে নিন।
এরপর মসুর ডাল গুড়ো করে নিন।
এবার একটি পরিষ্কার পাত্রে কফি পাউডার এর সাথে বাকি সব উপকরণ মিশিয়ে নিয়ে পরিমাণমতো কাঁচা তরল দুধ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন।
তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে অত্যন্ত কার্যকরী কফি পাউডার এর একটি ফেসপ্যাক।
উজ্জ্বল ফর্সা ত্বকের জন্য ফেসপ্যাকটি ত্বকে ব্যবহারের প্রক্রিয়াঃ
প্রথমেই সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
তুলা অথবা মুখের ব্রাশের সাহায্যে ফেসপ্যাকটি সম্পূর্ণ মুখে ভালভাবে লাগিয়ে নিন।
5 থেকে 7 মিনিট আলতোভাবে ঘষে ঘষে মুখের ওপর স্ক্রাব করুন।
20 থেকে 25 মিনিট অপেক্ষা করুন।
এরপর মিশ্রণটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার ঠান্ডা জল দিয়ে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।
ত্বকে কফি পাউডারের ফেসপ্যাকটি ব্যবহারের উপকারিতাঃ
ত্বক গভীর থেকে উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়ে উঠবে।
ত্বকের বিভিন্ন ধরনের দাগ, বলিরেখা, বুড়িয়ে যাওয়া ভাব দূর হবে।
ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর হবে।
ত্বকের লালচে ভাব দূর হবে।
ত্বকের মৃত কোষ সমূহ ঝরে গিয়ে বিদ্যমান কোষগুলোতে শক্তি যোগাবে।
কফি পাউডার এবং অ্যালোভেরা জেল এর ফেসপ্যাকঃ
ব্যবহৃত উপকরণঃ
1 চা চামচ কফি পাউডার।
2 চা চামচ অ্যালোভেরার জেল।
1 চা চামচ মধু।
আধা চা-চামচ কাঁচা হলুদের গুড়া।
আধা চা চামচ লেবুর রস।
ফেইস প্যাক টি তৈরি প্রক্রিয়াঃ
প্রথমে এলোভেরার একটি পাতা মাঝ বরাবর কেটে নিয়ে জেল বের করে নিতে হবে।
এরপর কফি পাউডার এবং অন্যান্য উপকরণ গুলো সব ভালোভাবে যোগ করে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে।
তাহলেই কফি পাউডার এর অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক তৈরি হবে।
ত্বকের যত্নে কফি পাউডার এর ফেসপ্যাক ব্যবহারের প্রক্রিয়াঃ
ক্লিনজার ব্যবহার করে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন।
পরিষ্কার কাপড় বা তুলার সাহায্যে সম্পূর্ণ মুখে স্ক্রাব করে ফেসপ্যাক এর মিশ্রন লাগিয়ে নিন।
5 থেকে 7 মিনিট ক্লক এবং এন্টি ক্লক স্টাইলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আলতো ভাবে ম্যাসাজ করুন।
20 থেকে 25 মিনিট শুকানোর জন্য সময় দিন।
সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম জলে তুলা ভিজিয়ে ঘষে ঘষে মিশ্রণটি তুলে নিন।
এবং সবশেষে পরিষ্কার ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিন।
ত্বকের যত্নে ফেসপ্যাক টির উপকারিতাঃ
ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখে।
ত্বকের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূর করে সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করবে।
ত্বকের কালো দাগ, বলিরেখা, মেছতার দাগ, ছোপ ছোপ দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করবে।
ফেসপ্যাকটি স্কিন কেয়ার হিসেবেও অত্যন্ত কার্যকরী।
ত্বক কে টানটান রেখে ত্বকের যৌবন ধরে রাখবে।
বিঃদ্রঃ
কফি পাউডার এর ফেসপ্যাক এর ব্যবহৃত কোন উপকরণ আপনার ত্বকের জন্য এলার্জিক হলে তা ব্যবহার করবেন না।
কারো ত্বক অতিরিক্ত সেনসেটিভ হলে লেবুর রস এর পরিবর্তে টমেটোর রস ব্যবহার করবেন।
অপ্রাপ্তবয়স্কদের ত্বকে ফেসপ্যাক ব্যবহার করবেন না।
ফেসপ্যাক ব্যবহারে ম্যাসাজ করার সময় অতিরিক্ত প্রেসার দিবেন না।
ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর অবশ্যই ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে নিবেন।
সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপায়ে উজ্জ্বল, ফর্সা এবং আকর্ষনীয় ত্বকের জন্য কফির ফেসপ্যাক অত্যন্ত কার্যকরী। তাই স্থায়ীভাবে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় ত্বক পেতে নিয়মিত সপ্তাহে অন্তত দু’বার কফির ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন।
ধন্যবাদ