কি করবেন যদি অনিয়মিত মাসিক হয়

 আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা

আজকের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে আমার মেয়ে বন্ধুদের জন্য। আমার ঐ সকল মেয়ে বন্ধুদের জন্য যাদের অনিয়মিত মাসিক হয়।

অনিয়মিত মাসিক যদি আপনাদের হয়ে থাকে এক্ষেত্রে আপনাদের কি করা উচিত???????

তাহলে বন্ধুরা চলুন জেনে নেওয়া যাক,

এটা মেয়েদের সাধারণ সমস্যার একটি। অনিয়মিত মাসিক বিষয়টি  চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এমেনোরিয়া বলা হয়। প্রতিমাসে এটি হয় বলে এটি কে বাংলায় সচরাচর মাসিক বলেও অভিহিত করা হয়। মাসিকের রক্ত স্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীর গর্ভধারণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত করা হয়। স্বাভাবিক এই মাসিক ২৮ দিন পর পর হয়। তবে একদিন আগে ও পরে হতে পারে। দুই-একদিন হেরফের হওয়াটা স্বাভাবিক। কিন্তু অধিক সময় ধরে যদি টানা বন্ধ থাকে অথবা খুব কম সময়ের মধ্যে যদি পিরিয়ড হয় তাহলে সেটাকে অনিয়মিত মাসিক বলা হয়। শারীরিক ওজন বাড়লে বা কোন হরমোনের কারণে এ ধরনের সমস্যা গুলো হতে পারে।

কিন্তু বন্ধুরা,

আজকে আমরা জেনে নিব কোন ধরনের কাজ গুলো আমাদের করা উচিত অনিয়মিত ঋতুস্রাব বন্ধ করার জন্য

  • আমাদেরকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং নিজেকে ঠান্ডা রাখতে হবে।
  • শারীরিক এবং মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলতে হবে
  • নিয়মিত শরীর চর্চা ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
  • ক্যাফেইন জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে যেমন ধরুন কফিতে প্রচন্ড পরিমাণে ক্যাফেইন জাতীয় পদার্থ থাকে যা আমাদের শরীরের হরমোন এর উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয় তাই আমাদেরকে এ ধরনের খাবার পরিহার করতে হবে।
  • ওজন কমিয়ে ফেলতে হবে।
  • নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে অনিয়মিত মাসিকের জন্য অনেক উপকারী। তবে যারা গর্ভবতী তাদের কাঁচা পেঁপে না খাওয়াই ভাল। এতে গর্ভপাত হতে পারে।
  • ডায়াবেটিসের কারণে হতে পারে।
  • মাসিকের সময় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রন এর চাহিদা তৈরি হয়। এ সময় যে পরিমাণ রক্তক্ষরণ হয় তাতে প্রচুর আয়রন ও ক্যালসিয়াম আমাদের শরীর থেকে চলে যায় তাই এর অভাব পূরণ করার জন্য আমাদেরকে পিরিওডের এক বা দুদিনের আগে টক জাতীয় খাবার খাওয়া ভাল।
  • আঙ্গুর ফলে পিরিওড রেগুলার করার কার্যকারিতা রয়েছে। প্রতিদিন আঙ্গুরের জুস খেলে বা খাবারের তালিকায় আঙ্গুর রাখলে ভবিষ্যতে মাসিক নিয়মিত রাখতে সহায়তা করে।
  • গাজরে রয়েছে এমন কিছু উপাদান যা মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করে।
  • এলোভেরা বা ঘৃতকুমারী চর্চা মাসিক নিয়মিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • যাদের টেনশন বেশি করে তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি হয়। টেনশন কম করতে হবে।
  • সবুজ শাকসবজি বেশি করে খাওয়া উচিত।
  • প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত।

বন্ধুরা আরেকটি উপায় আছে সেটি হল………

  • ব্যায়াম

যে সব নারীরা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের মাসিকের সমস্যা থাকে না। নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম আছে সেগুলো করলে অনেক সময় মাসিক হয়ে যায়। ব্যায়াম না করার কারণে পেশি বাধা পেয়ে থাকে যার কারণে পেশী সংকোচন শুরু হয়। শরীরে রক্ত প্রবাহ কমিয়ে দিতে থাকে।

  • ঋতুস্রাব শেষ হবার পর ব্যায়াম করলে পরবর্তী সময়ে সঠিক সময়ে মাসিক হবার সম্ভাবনা থাকে
  • টক জাতীয় ফল যেমন তেতুল, মালটা, জলপাই মাসিক নিয়মিত করতে সাহায্য করে।
  • চিনি মেশানো পানিতে তেঁতুল এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন এরপর সঙ্গে লবণ চিনি মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন। এটি দিনে দুইবার পান করুন এতে আপনার অনিয়মিত মাসিক নিয়মিত করে দেবে।
  • ১ কাপ পানিতে এক বা দুই চা-চামচ আদা কুচি করে ৫ থেকে ৭ মিনিট সেদ্ধ করে পানিতে মিশিয়ে নিন। খাবার খাওয়ার পর তিন বেলাই পান করুন। নিয়মিত মাসিক অবশ্যই আপনি পাবেন।
  • এছাড়াও যে বিষয়টি আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নিয়মিত মাসিক পেতে সেটি হল স্বাস্থ্যকর জীবন। যেসব নারীর মনোপজ এর বয়স হয়ে এসেছে তাদের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন আরো বেশি জরুরী। কারন পিরিয়ডের পর পরই অনেক রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। কারণ একবার মাসিক দেরিতে হলেও চিন্তিত হবার কিছুই নেই তবে পিরিয়ডের দিকে খেয়াল রাখুন। ৩মাস টানা পিরিয়ড না হলে বা প্রতিবার পিরিয়ডের মাঝে ৩৫ দিনের বিরতি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে আপনাদের যোগাযোগ করা উচিত।

তাহলে বন্ধুরা উপরের উপায়গুলো যদি আপনারা অনুসরণ করেন আমরা আপনাদেরকে আশ্বস্ত করতে পারব যে আপনারা আপনাদের নিয়মিত পিরিয়ড পাবেন।