কি খেলে যৌন হরমোন বেড়ে যায় ???  

বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে যে বিষয়ে আলোচনা করব সেটি হল হরমোন কি? এবং যৌন হরমোন কাকে বলে? এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে এইটার প্রভাব কিরকম?

তাহলে বন্ধুরা, প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক………..

হরমোন কি?.

“যে জৈব রাসায়নিক তরল যা শরীরের কোন কোষ বা গ্রন্থি থেকে শরীরের একটি নির্দিষ্ট অংশে নিঃসরিত হয় রক্ত রস বা ব্যাপন প্রক্রিয়া উৎপত্তিস্থল থেকে দূরে বাহিত হয়ে দেহের বিভিন্ন বিপাকীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্রিয়ার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় তাদের হরমোন বলে।“  

হরমোন প্রথম আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী স্টারলিং। হরমোন কথার অর্থ হল জাগ্রত করা বা উত্তেজিত করা।

হরমোনের বৈশিষ্ট্যঃ

  • হরমোন একপ্রকার এস্টোরয়েড জৈব পদার্থ।যা কোনো নিঃসৃত স্থান থেকে দূরবর্তী স্থানে সঞ্চিত হয়।
  • নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া অন্য কোথাও হরমোন সঞ্চিত হয় না ।
  • হরমোন রাসায়নিক সমন্বয়কারী অর্থাৎ কেমিক্যাল হিসেবে কাজ করে ধারাবাহিকভাবে।
  • রক্তে হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি বা কম থাকলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়।
  • হরমোন রাসায়নিক বার্তাবাহক হিসাবে রাসায়নিক সংযোগ স্থাপন করে থাকে।

হরমোনের কাজঃ

আমাদের দেহের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এর রাসায়নিক সংযুক্তি হরমোন করে থাকে।

দেহের বৃদ্ধি,

হজম,

প্রতিরোধ ক্ষমতা,

রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ

ঘাম তৈরি

হূদযন্ত্রের কার্যক্রম বজায় রাখা

আমাদের বিভিন্ন আবেগের অনেকটাই এই হরমোন নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করব কিভাবে বা কোন কোন খাবারের মধ্যে দিয়ে আমরা টেস্টোস্টেরন হরমোন কে বাড়াতে পারি……

এই বিষয়ে অনেকেই জানার কৌতূহল প্রকাশ করেছে, তাদের কথা মাথায় রেখেই আজকে আমরা আপনাদের জন্য কতগুলো খাবারের তালিকা নিয়ে এসেছি, যে খাবারগুলো গ্রহণের মধ্য দিয়ে আপনারা আপনাদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বাড়াতে পারেন।

বন্ধুরা সাধারণত খাবারে ভিটামিন এবং মিনারেলের ভারসাম্য ঠিক থাকলে শরীরে এন্ড্রোক্রাইন সিস্টেম সক্রিয় থাকে। আর তা শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং টেস্টোস্টেরনের তৈরি হওয়া কে নিয়ন্ত্রন করে।

ইস্ট্রোজেন এবং টেস্টোস্টেরন সেক্সের ইচ্ছা এবং পারফরম্যান্সের জন্য দায়ী। সেক্স পাওয়ার  বা যৌন শক্তি শুধুমাত্র প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া যায়।  আজকাল অনলাইনে, পথে-ঘাটে,  হাটে বাজারে, যে সকল গল্প বা ওষুধ পাওয়া যায় সেগুলোর বৈজ্ঞানিক ভিত্তি কি তা অনেকে জানেনা। তবে আমাদের জানা উচিত জীবনে কি খেলে বাড়বে যৌন শক্তি। সেই সাথে শরীরের গঠন বাড়ে ও কণ্ঠস্বর পরিষ্কার হয় ।

  • খেজুর চুষলে। খেজুর দেহের দুর্বল শিরা গুলো দূর করে এবং মহিলাদের মধ্যে যৌন ক্ষ্মতা বাড়িয়ে তুলে।
  • তাছাড়া সবজি মধুতে সেক্স পাওয়ারের সকল উপাদান বিদ্যমান থাকে।
  • প্যারালাইসিস এর জন্য মধু উপকারী। কলিজা যৌন ক্ষ্মতা বাড়াতে খাদ্য হিসাবে কলিজার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ কলিজায় প্রচুর পরিমাণে জিংক থাকে আর এই জিনিস শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়িয়ে দেন।এটি যথেষ্ট পরিমাণ শরীরে না থাকলে পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয় না। পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে যে হরমোন নিঃসৃত হয় তা টেস্টোস্টেরন তৈরি হতে সাহায্য করে। তাছাড়া জিংক এর কারণে আরও কিছু এনজাইম নিঃসৃত হয়।

 

 

  • রসুন। ডাক্তারদের মতে রসুনে অনেক উপকারিতা রয়েছে। রসুন ভালো করে ঋতুস্রাব চালু করে। প্রস্রাব স্বাভাবিক করে। পাকস্থলি থেকে গ্যাস নির্গত করে। নিস্তেজ হয়ে যাওয়া লোকদের মধ্যে যৌন ক্ষমতা সৃষ্টি করে। ভিতরে বীর্য বৃদ্ধি করে, এবং কাঁপুনি রোগের উপকার সাধন করে। তবে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অধির রসুন ব্যবহার ক্ষতিকারক।

 

  • সবজির বীজ। কুমড়োর বীজ, সূর্যমূখীর বীজ ইত্যাদিতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় যে স্টার্চ রয়েছে এবং এই স্টারচ উপকারী কোলেস্টেরল তৈরী করে, সেক্স হরমোন গুলো ঠিক মতো কাজ করার জন্য এই কোলেস্টেরল অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শিমের বিচি তে প্রচুর পরিমাণে উপকারী কোলেস্টেরল থাকে, যেটা আপনার যৌন ইচ্ছা এবং সামর্থ্য বাড়ায়। জাপানিরা যৌন ইচ্ছা বাড়ানোর জন্য খাবারে প্রচুর পরিমাণে শিমের বিচি ব্যবহার করে থাকে। কুমড়োর বিচির মত সূর্যমুখীর বীজ হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে আপনার যৌন আকাঙ্ক্ষা ও বেড়ে যায়। সাথে সাথেই সূর্যমুখীর বীজ ও কুমড়োর বীজের জিংক এর অন্যতম সেরা প্রাকৃতিক উৎস এই টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়ায়। আপনার যৌন  ইচ্ছা বাড়ানোর জন্য এটি অনেক কার্যকর ভূমিকা রাখে।

 

  • ডিম যৌন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী এছাড়াও ডিম এ প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি থাকে। …

 

  • সামুদ্রিক মাছ। সামুদ্রিক মাছে রয়েছে ওমেগা 3, ফ্যাটি এসিড যা সুস্থ যৌন জীবনের জন্য অত্যন্ত দরকারি। সামুদ্রিক মাছেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড থাকে। ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড যৌন  ইচ্ছা বাড়িয়ে দেয়। এবং মস্তিষ্কে উদ্দীপনা জাগিয়ে তোলে।  তৈলাক্ত ও সামুদ্রিক মাছ খেলে শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং হরমোন নিঃসরণ ঘটায়। ফলে যৌন স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এছাড়াও যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যৌন স্বাস্থ্য  ঠিক রাখতে চাইলে প্রতিদিন আমাদের রঙিন ফলমূল খাওয়া উচিত।

 

  • আঙ্গুর, কমলা, কমলা লেবু, তরমুজ,  ইত্যাদি ফলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধির উপকারী উপাদান থাকে এবং সেটা বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। এ ফল এক ধরনের কামোদ্দীপক যৌগ বিস্তৃত হয় সাধারণভাবে যৌগটি স্নায়ু কোষ উদ্দীপিত করে এবং রক্ত সঞ্চালন কে বাড়িয়ে তোলে। ফলে যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। আপনি কফির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

 

  • টাটকা সবজি, তরতাজা ফরমালিনমুক্ত শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে প্রয়োজনীয় ভিটামিন পাওয়া যায়। পালং শাকে আছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। শরীরে রক্ত চলাচলে যৌন উদ্দীপনা বাড়ে। পালং শাক ও অন্যান্য বিভিন্ন রকমের শাক আমাদের শরীরে এন্টি-অক্সিডেন্ট তৈরি করে যেটা আমাদের যৌন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

  • মিষ্টি আলু, মিষ্টি আলু খুব ভালো ধরনের একটি সেক্সফুড। শরীর কোন সবজিতে বিটা ক্যারোটিন পেলে তা ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। এই ভিটামিন নারীদের যৌন এবং ইউটেরাসের আকার ভালো রাখে। তাছাড়া এটা সেক্স হরমোন তৈরিতে সহায়তা করে।

 

  • ডার্ক চকোলেটে আছে ফেনিলেথ্যালামাইন নামক একটি উপাদান যা শরীরে বাড়তি যৌন উদ্দীপনা তৈরী করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সঙ্গীর প্রতি আকর্ষণবোধও বাড়িয়ে তোলে এই ডার্ক চকলেট। ডার্ক চকোলেটে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে তাই প্রতিদিন শতকরা ৭০ ভাগ কোকোযুক্ত ডার্ক চকোলেটের ২  ইঞ্চির একটি টুকরো খেয়ে নেওয়া উচিত।

 

  • কালিজিরা। এটি যৌনতার ভারসাম্য রাখার পাশাপাশি শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি ও স্তন সুগঠিত করে। পক্ষাঘাত ও প্যারালাইসিস রোগী কালোজিরার তেল মালিশ করলে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়। কালোজিরা যৌনব্যাধি স্নায়ুবিক দুর্বলতা আক্রান্ত রোগীদের জন্য উৎকৃষ্ট মানের ঔষধ।

 

  • বাদাম, চিনাবাদাম, কাজু বাদাম,  পেস্তা বাদাম,  ইত্যাদিতে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাট আছে। এগুলো শরীরে প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল তৈরি করার পাশাপাশি সেক্স হরমোন গুলো কে সঠিকভাবে পথ নির্দেশ করে। তাই প্রতিদিন অল্প করে হলেও বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে যৌন স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকবে।

 

  • কিসমিস মানব শরীরে যৌন উদ্দীপনা বা যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে কিসমিসের সাথে অন্য কোন কিছুর তুলনা হয়না। আঙ্গুর ফল বিশেষ প্রক্রিয়ায় কিশমিশে রূপান্তর করা হয়। কিন্তু গুণের দিক থেকে আঙ্গুরের চাইতে কিশমিশের অবদান অনেক বেশি।

 

বন্ধুরা উপরে যে খাবারের নাম গুলো আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম এই খাবারগুলো আপনাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখুন।  আপনাদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন হরমোনের অভাব হবে না এবং আপনাদের দাম্পত্য যৌন জীবন খুব সুখের কাটবে।  ধন্যবাদ।