আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা
আজ একটি জরুরি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
বিষয়টি হলো গর্ভধারণ কালীন অবস্থায় একজন মা কোন কোন খাবারগুলো খেতে পারবে……………
আমার অনেক বন্ধুরা এক্ষেত্রে বলবে খাবার তো খাবার, এক্ষেত্রে আবার খাবার না খেতে পারার কারণ কি?
সত্যি বন্ধুরা, গর্ভধারণকাল সময়ই আমাদের অনেক বেশি সচেতন ভাবে চলতে হবে। কারণ আমার জীবনটা আমার। আমি যেমন ইচ্ছা তেমন করে চলতে পারি যেহেতু আমার জীবনের দায় একান্তই আমার। কিন্তু গর্ভধারণ কালীন সময়ে আমার ভিতরে যে অন্য একটি জীবন বেড়ে ওঠে বন্ধুরা তার জীবনের দায়ভার তো আমার নয়। অর্থাৎ তার ভালো-মন্দ দেখার আমার যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে আমরা তার খেয়াল রাখতে পারি না। কারণ এক্ষেত্রে একটি দায়বদ্ধতা থেকে যায়।
তাই বন্ধুরা আমরা নিজেদেরকে যেভাবে ইচ্ছা পরিচালিত করতে পারলেও আমাদের পেটের মধ্যে যে সন্তানটি বেড়ে ওঠে তাকে আমরা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে পরিচালিত করতে পারি না। তার বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে আমাদের সচেতনতা অবশ্যই অবলম্বন করা উচিত। তাই সন্তান যখন পেটের মধ্যে থাকে তাকে কি তখন আলাদাভাবে যত্ন নেওয়া সম্ভব ??
মায়ের যত্ন নেওয়ার মধ্য দিয়ে সন্তানের যত্ন নেওয়া হয়। তাই সন্তানের খাবারের ক্ষেত্রে সচেতনতা থাকতে হবে। মানে মায়ের খাবারের সচেতনতা।
তাই প্রতিটা গর্ভবতী মাকে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা সচেতনতা অবলম্বন করতে হয়।
এখন আমরা আপনাদেরকে যে বিষয়টি বলবো সেটি হল গর্ভধারণ কালীন সময়ে কোন কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত। যাতে করে সন্তান মায়ের গর্ভে বেড়ে উঠছে সে সঠিকভাবে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ লাভ করতে পারে। সাথে সাথে মায়ের শরীর যাতে সুস্থ থাকে।
তাহলে বন্ধুরা জেনে নেওয়া যাক সেই সকল খাবার গুলো কি কি
১। শর্করা জাতীয় খাবার
প্রথমে আসা যাক শর্করা জাতীয় খাবার। বন্ধুরা আমরা শর্করাজাতীয় খাবার খায় বিশেষত শরীরে ক্যালরী বা শক্তি উৎপাদন করার জন্য। গর্ভবতী মায়ের শরীর স্বাভাবিক মানুষের শরীরের চেয়ে বেশি কাজ করে। তাই গর্ভবতী মায়েদের শর্করার পরিমাণ অন্য স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে একটু বেশি পরিমাণে দরকার।
তাই প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের ওজন স্বাভাবিক মানুষের চেয়ে বেশি পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। এতে করে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী মাত্রা পূরণ হয়।
২। প্রোটিন জাতীয় খাবার
প্রতিটি গর্ভবতী মাকে প্রোটিন জাতীয় খাবারের চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে। প্রোটিন জাতীয় খাবার আমাদের চারিপাশে রয়েছে ডিম, দুধ, মাছ, মাংস সব ধরনের খাবার থেকে আমরা চাহিদামত প্রোটিন পেয়ে থাকে।
তাই প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা শর্করার সাথে সাথে প্রোটিন যেন থাকে।
৩। দুগ্ধজাত খাবার
যে খাবারটি হলো সেটি হল দুগ্ধজাত খাবার। দুগ্ধজাত খাবার বলতে আমরা সাধারণত বুঝি দুধ মালাই এ ধরনের খাবার গুলো। এই ধরনের দুগ্ধজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। যা বাচ্চার সাথে সাথে মায়ের শরীরের হাড় গঠন করতে খুব বেশি ভূমিকা রাখে।
৪। শাকসবজি ও ফলমূল
যে বিষয়টি আমাদের খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো গর্ভধারণ কালীন সময়ে মায়েদেরকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে। শাকসবজি এবং ফলমূল টাটকা ও সতেজ হতে হবে। সবুজ শাকসবজি ফল-মূলের চেয়ে হাজার গুনে ভালো। তাই প্রতিটা গর্ভধারণ কালীন সময়ে মায়েদের উচিত অন্তত পক্ষে দিনে পাঁচবার সবজি খাওয়া। এবং তিনবার ফল খাওয়া। এতে করে শরীরে আয়রন ও ভিটামিনের অভাব পূরণ হয় এবং বাচ্চা মানসিকভাবে বিকশিত হয়। এর সাথে সাথে মায়েদের যে শক্তি খরচ হয় তাও পূরণ হয়।
৫। সকাল বেলার রোদ
গর্ভবতী মায়েদেরকে এই ধরনের খাবারের পাশাপাশি যে জিনিসটি বিশেষ করে খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো সকাল বেলার রোদ। প্রতিটা মায়ের উচিত সকালবেলায় ভোরের আলোতে নিজের শরীরটাকে একটু মেলে ধরা। কম কাপড়ে ছাদে বা উঠোনে বসে থেকে ২৫ মিনিটের জন্য সূর্যের তাপ থেকে সরাসরি সুবিধা গ্রহণ করতে দেওয়া। বেশি পরিমাণ কাপড় তখন শরীরে রাখা যাবে না। এতে করে সূর্যের রশ্মি আসতে শরীরে পৌঁছাতে বাধা দেয় তাই যখনই প্রসূতি মায়েরা গর্ভবতী। মায়েরা আলোতে শরীর মেলে দিবেন। তখন অবশ্য কম পরিমাণে খাবেন। গর্ভ কালীন সময়ে মায়েরা যদি সকালে এই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করেন তাহলে শরীরে ভিটামিনের অভাব পূরণ হয়। যার কারণে শিশুর হার্ট এবং মায়ের হাড় শক্ত হয়।
এটা বাচ্চা ডেলিভারির সময় অনেক কার্যকর একটি প্রতিক্রিয়া দেয়। অর্থাৎ স্বাভাবিক ভাবে বাচ্চা হতে আর কোন তেমন বাধা থাকে না।
আমরা যে সকল পরামর্শগুলো আজকে আমার বন্ধুদের অর্থাৎ মেয়ে বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বললাম, আপনারা যদি আমাদের এই পরামর্শ গুলো অনুসরণ করেন তাহলে ইনশাল্লাহ আপনাদের গর্ভধারণ কালীন সময়ে কোন সমস্যা হবে না এবং সুন্দর পৃথিবীতে সুস্থভাবে আপনার বাচ্চা পৃথিবীতে আসবে।