চুলের রুক্ষতা দূর করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে পুনরায় ঘন, কালো, উজ্জ্বল এবং মসৃণ করতে কার্যকরী হেয়ারমাস্ক

আমাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা, আবহাওয়া এবং চুলের অযত্নের কারণে আমাদের চুল রুক্ষ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। নারী-পুরুষ প্রায় সব বয়সের লোকেরাই এখন এই সমস্যাটি ভুগছেন। অনেকেই দ্বারস্থ হচ্ছেন কেমিক্যালযুক্ত চুলের প্রসাধনীর । কিন্তু বাজারে বিদ্যমান চুলের প্রসাধনী গুলো কোনটি আসল কোনটা নকল তা বুঝার কোনো সহজ উপায় নেই। তাই নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে ঘন কালো চুল করার জন্য অনেকেই সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায় খুঁজে আসছেন। তাই সুপ্রিয় বন্ধুরা আপনাদের জন্য শেয়ার করছি দুটি এমন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক হেয়ার মাস্ক, যা আপনাদের চুলের রুক্ষতা সম্পূর্ণরূপে দূর করে ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে পুনরায় ঘন কালো ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল এবং মসৃণ করে তুলবে। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক চুলের রুক্ষতা দূর করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে ঘন, কালো, লম্বা এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলার অত্যন্ত কার্যকরী কিছু হেয়ার মাস্ক।

চুলের রুক্ষতা দূর করে ক্ষতিগ্রস্ত চুল ঘন, কালো, উজ্জ্বল এবং মসৃণ করে তোলার কার্যকরী হেয়ার মাস্ক সমূহঃ

কিছু অনন্য প্রাকৃতিক গুণসম্পন্ন উপাদান দিয়ে হেয়ার মাস্ক সমূহ তৈরি হয় নিম্নে তা বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

ওটস এর হেয়ার মাস্কঃ

উঠছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি যা আমাদের চুলের কোষে  অর্থাৎ ফলিকলে শক্তি যোগায়। মাথার ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রেখে রুক্ষতা দূর করে  এবং এর এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ছত্রাক এবং সংক্রমণের হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে ঘন, কালো এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল থাকতে সাহায্য করে।

উপকরণ সমূহঃ

আধা কাপ ওটস।

2 টেবিল চামচ অপরিশোধিত নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল।

আধা কাপ কাচা তরল  দুধ।

চুলের প্রয়োজন অনুযায়ী উপকরণের পরিমাণ বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন।

হেয়ার মাস্ক তৈরির প্রক্রিয়াঃ

প্রথমে আধাকাপ দুধের মধ্যে আধা কাপ ওটস ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে 5 থেকে 10 মিনিট ভিজিয়ে রাখুন।

এরপর তাতে  পরিমাণমতো নারিকেল তেল ভালোভাবে গুলিয়ে তৈরি করে নিন ওটস এর অত্যন্ত কার্যকরী একটি হেয়ার মাস্ক।

ওটস এর হেয়ার মাস্ক চুলে ব্যবহার পদ্ধতিঃ

পরিষ্কার মাথার ত্বকে ওটস এর হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করবেন।

সম্পূর্ণ চলে চুলের গোড়ায় এবং মাথার স্কাল্পে ওটস এর হেলমেট ব্রাশের সাহায্যে ঘষে ঘষে লাগিয়ে নিন।

আলতোভাবে 3 থেকে 5 মিনিট চুলের গোড়া মাসাজ করুন।

এবার 25 থেকে 30 মিনিট অপেক্ষা করুন।

সবশেষে ভার্জিন শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

চুলের রুক্ষতা দূর করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে পুনরায় ঘন,কালো, উজ্জ্বল এবং মসৃণ করতে সপ্তাহে অন্তত দুবার ওটস এর হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘৃতকুমারীর হেয়ার মাস্কঃ

চুলের যত্নে ঘৃতকুমারীর অনন্য প্রাকৃতিক গুণের কারণে বহুকাল ধরে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঘৃতকুমারী তে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা আমাদের চুলের । আদ্রতা ধরে রেখে রুক্ষতা সম্পূর্ণরূপে দূর করে। এটির অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান মাথার ত্বকের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে চুলকে রক্ষা করে ফলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।

উপকরণ সমূহঃ

আধা কাপ  ঘৃতকুমারী জেল।

3 টেবিল চামচ অপরিশোধিত নারিকেল তেল।

1 টেবিল চামচ টক দই।

1 চা চামচ পাতিলেবুর রস।

হেয়ার মাস্ক তৈরির প্রক্রিয়াঃ

একটি পরিষ্কার পাত্রে ঘৃতকুমারী জেল, নারিকেল তেল এবং টকদই ভালোভাবে গুলিয়ে নিন। এবার মিশ্রণ টির সাথে লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে তৈরি করে নিন ঘৃতকুমারীর অত্যন্ত কার্যকরী একটি হেয়ার মাস্ক।

ঘৃতকুমারীর হেয়ার মাস্ক চুলে ব্যবহার পদ্ধতিঃ

পরিষ্কার চুলের ব্রাশের সাহায্যে সম্পূর্ণ চুলে, চুলের গোড়ায় এবং মাথার স্কাল্পে ঘৃতকুমারীর হেয়ার মাস্ক এর পেস্ট ভালভাবে লাগিয়ে নিন।

আঙ্গুল এর সাহায্যে 3 থেকে 5 মিনিট চুলের গোড়া ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। এতে করে চুলের গোড়া মজবুত হবে কারণ এর ফলে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

এবার 30 থেকে 40 মিনিট অপেক্ষা করুন।

তারপর প্রথমে ঠান্ডা পরিষ্কার জলে চুল ধুয়ে নিন এবং তারপর ভেষজ শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন।

চুলের রুক্ষতা সম্পূর্ণরূপে দূর করে ক্ষতিগ্রস্থ চুলকে  ঘন, কালো ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল  করে তুলতে ঘৃতকুমারীর হেয়ার মাস্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিঃদ্রঃ

হেয়ার মাস্ক গুলোতে ব্যবহৃত সবগুলো উপাদান সুপারশপ এবং প্রসাধনীর দোকানে পাওয়া যাবে।

হেয়ার মাস্ক ব্যবহারের পূর্বে মাথার ত্বক অবশ্যই পরিষ্কার করে নিবেন।

চুলের কালার করালে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করবেন না।

হেয়ার মাস্ক ব্যবহারের পর অবশ্যই চুল দ্রুত শুকিয়ে নেবেন।

উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে নিজেদের চুলের রুক্ষতা সম্পূর্ণরূপে দূর করুন। ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে করে তুলুন  ঘন, কালো, মসৃণ, আকর্ষণীয় এবং স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।