ব্রণ আমাদের সৌন্দর্যের অন্তরায়। কিছু সময় ত্বকে থেকে ব্রণ চলে গেলেও ব্রণের জেদি দাগ আমাদের ত্বকে থেকে যায়। আমাদের চেহারার স্বাভাবিক সৌন্দর্য সম্পূর্ন বিকৃত হয়ে যায়। তোর থেকে এসব পুরাতন ব্রণের দাগ ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করতে আমরা অনেক সময়ই কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনীর আশ্রয় নেই। কিন্তু বাজারে আসল নকল কেমিক্যাল প্রসাধনীর প্রভেদ বুঝতে না পারায় অনেকেই নিজেদের ত্বকের ক্ষতি করে বসছি। তাই ব্রণ, পুরাতন ব্রণের দাগ, এবং মুখের কালো দাগ দূর করতে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে অত্যন্ত কার্যকরী কিছু ফেইসপ্যাক এবং তার ব্যবহার পদ্ধতি নিয়ে আমাদের এই আলোচনাটি সাজিয়েছি। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক ব্রণ, পুরাতন ব্রনের দাগ এবং মুখের যেকোনো কালো দাগ দূর করে ত্বক কে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলতে শ্রেষ্ঠ উপায় সমূহ।
ত্বক থেকে ব্রণ পুরাতন ব্রণের দাগ এবং মুখের সব ধরনের দাগ দূর করার শ্রেষ্ঠ উপায় সমূহঃ
ত্বক থেকে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করে ত্বক কে উজ্জ্বল ও ফর্সা করতে কিছু অত্যন্ত কার্যকরী প্রাকৃতিক উপাদান এর সাহায্যে ফেসপ্যাক তৈরি করে নিতে হবে।
আলুর ফেসপ্যাকঃ
উপকরণ সমূহঃ
দুটি চামড়া ছিলানো বড় আলুর পেস্ট।
1 চা চামচ বেসন।
একটি অর্ধেক পাকা টমেটোর পেস্ট।
1 চা চামচ মধু।
পরিমাণমতো গোলাপজল।
সবগুলি উপকরণ একটি পরিষ্কার পাত্রে নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন।
উপকারিতাঃ
আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনস, মিনারেলস, জিংক এবং ফসফরাস যা আমাদের ত্বকের দাগ দূর করে ত্বক কে অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তোলে।
টমেটোতে বিদ্যমান ভিটামিন সি পুরাতন ব্রণের দাগ দূর করে।
ত্বকের বলিরেখা এবং বুড়িয়ে যাওয়া ভাব দূর করে।
অ্যালোভেরা ফেসপ্যাকঃ
উপকরণ সমূহঃ
2 চা চামচ অ্যালোভেরার জেল।
এক চা চামচ চালের গুঁড়া।
আধা চা-চামচ কাঁচা হলুদের গুড়া।
1 চা চামচ লেবুর রস।
পরিমান মত কাঁচা তরল দুধ।
সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে অ্যালোভেরার অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক।
উপকারিতাঃ
অ্যালোভেরায় বিদ্যমান এন্টি অক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া সমূহ দূর করে।
ত্বকের সব ধরনের দাগ দূর করে।
বিভিন্ন সংক্রমণের হাত থেকে ত্বক কে রক্ষা করে।
পুরাতন ব্রণের দাগ, ব্ল্যাকহেডস, কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করে।
ত্বকের কোষের শক্তি যোগায়।
ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখে।
চন্দন পাউডার এর ফেসপ্যাকঃ
উপকরণ সমূহঃ
2 চা চামচ চন্দন পাউডার।
2 চা চামচ বিটরুট এর রস।
1 চা চামচ শশার রস।
1 চা চামচ মধু।
পরিমাণমতো গোলাপজল।
সবগুলো উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে চন্দন পাউডার এর অত্যন্ত কার্যকরী ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন।
উপকারিতাঃ
চন্দন পাউডার এর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-এইজিং এবং অ্যান্টিসেপটিক উপাদান যা ত্বককে কোমল মসৃণ করে তোলে।
পুরাতন ব্রণের দাগ ব্রণ দূর করে।
ত্বকের ফাইন লাইন রিংকেল দূর করে।
ত্বক কে অতিমাত্রায় ফর্সা ও উজ্জ্বল করে তোলে।
এছাড়াও মুখের সব ধরনের দাগ দূর করতে বিটরুটের। এর নির্যাস অত্যন্ত কার্যকরী।
ব্রণ, পুরাতন ব্রণের দাগ এবং মুখের অন্যান্য দাগ দূর করতে ফেসপ্যাক সমূহ ত্বকে ব্যবহার পদ্ধতিঃ
দুটি ধারাবাহিক ধাপ অনুসরণ করে ফেস প্যাক গুলো ত্বকে ব্যবহার করতে হবে।
প্রথম ধাপঃ
ফেসপ্যাক সমূহ ত্বকে ব্যবহারের প্রথম ধাপ হচ্ছে ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার করে নেয়া।
1… আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী যেকোনো ক্লিনজার ক্রিম বা ফেসওয়াশ এর মাধ্যমে মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
2… 1 চা চামচ লেবুর রস 1 চা চামচ অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে পারেন।
3… কাঁচা তরল দুধ এবং গোলাপ জলের সাথে মুখ পরিষ্কার করলে ভাল ফল পাবেন।
দ্বিতীয় ধাপঃ
ব্রণ, পুরাতন ব্রণের দাগ এবং মুখের সব ধরনের দাগ দূর করতে মুখে ফেসপ্যাক সমূহকে ব্যবহারের দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছে তাকে ফেসপ্যাক এপ্লাই করা।
মুখের ব্রাশ বা তুলার সাহায্যে সম্পূর্ণ মুখের ফেসপ্যাক স্ক্রাব করে লাগিয়ে নিন।
5 থেকে 7 মিনিট আলতোভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সম্পূর্ণ ত্বক ম্যাসাজ করুন।
15 থেকে 20 মিনিট ফেসপ্যাক শুকানোর সময় দিন।
শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম জলে তুলা ভিজিয়ে ফেসপ্যাক ঘষে ঘষে তুলে নিন।
সবশেষে ঠাণ্ডা পরিষ্কার জলে মুখ ধুয়ে নিন।
বিঃদ্রঃ
ফেসপ্যাকে ব্যবহৃত কোন উপাদান আপনার ত্বকের জন্য এলার্জিক হলে তা ব্যবহার করবেন না।
ফেসপ্যাক ত্বকে লাগিয়ে বা ব্যবহারের পর রোদে, ধুলাবালি যুক্ত স্থানে এবং গরম স্থানে যাবেন না।
মুখে ফেসপ্যাক স্ক্রাব করার সময় অতিরিক্ত প্রেসার দিবেন না।
ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর অবশ্যই আপনার ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে নিবেন।
আপনার ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল হলে লেবুর রস এর পরিবর্তে টমেটোর রস ব্যবহার করবেন।
ব্রন মুখের সব ধরনের দাগ এবং পুরাতন ব্রণের দাগ দূর করে ত্বক কে উজ্জ্বল, ফর্সা ও আকর্ষনীয় করে তুলতপ উপরে উল্লেখিত ব্যবহার পদ্ধতি অনুসরণ করুন। স্থায়ীভাবে মুখের কালো দাগ এবং ব্রণের দাগ দূর করে ফর্সা ও উজ্জ্বল ত্বক পেতে সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চারবার ফেসপ্যাক সমূহ ব্যবহার করুন।
ধন্যবাদ