শহরের কোলাহল থেকে দূরে গিয়ে যদি প্রকৃতির মাঝে নিজেকে খুঁজে পেতে চান তাহলে ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য নিঝুম দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপ তার সৌন্দর্য দিয়ে আমাকে যেমন মুগ্ধ করেছে। আপনাকেও মুগ্ধ করবে আমি নিশ্চিত।
ঢাকা থেকে নিঝুম দ্বীপ দুই ভাবে যাওয়া যায়:
1. সদরঘাট হয়ে লঞ্চে করে হাতিয়া
2. নোয়াখালি থেকে চেয়ারম্যান ঘাট হয়ে হাতিয়া
আমি গিয়েছিলাম নোয়াখলী দিয়ে কারণ আমার কাছে মনে হয়ে ছিল এই পথ টাই সহজ এবং কম সময়ে যাওয়া সম্ভব।
সদরঘাট থেকে প্রতিদিন ৫:৩০-৬:০০ হাতিয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। তাশরীফ ১/২ নামের লঞ্চ প্রতিদিন হাতিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। এই জার্নি অনেক লম্বা একটা জার্নি। হাতিয়া পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল ৬/৭ বেজে যায়।
তাই আমি এই পথ এড়িয়ে চলি।
আরেক ভাবে হাতিয়া যাওয়া যায়। এবং তা হলো নোয়াখালী হয়ে।
ঢাকা থেকে নোয়াখালির ডিরেক্ট বাস যেমন এনা পরিবহন, একুশে এক্সপ্রেস,গ্রীনলাইন এ করে নোয়াখলীর সোনাপুর জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত এবং সেখান থেকে সিএনজি তে করে চেয়ারম্যান ঘাট।
চেয়ারম্যান ঘাট থেকে ৩ ভাবে হাতিয়া যাওয়া যায়। সি ট্রাক, ট্রলার ও স্পীডবোট।
হাতিয়া থেকে এইবার মুক্তারিয়া ঘাট যাওয়ার পালা।
সিএনজি এবং বাইক এর বিশাল সিন্ডিকেট হাতিয়াতে। আমরা দামদর করে উঠে পরলাম সিএনজি তে। তারপর গিয়ে পৌঁছলাম মুক্তরিয়া ঘাট।
মুক্তাড়িয়া ঘাট থেকে ২ মিনিট এর স্পীডবোট জার্নি করার পর আমরা পৌঁছে গেলাম নিঝুম দ্বীপ।
নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমে বঙ্গপসাগরের কোলে জেগে উঠা সবুজ প্রকৃতির মায়াবী এক ভূখন্ডের নাম নিঝুম দ্বীপ। বর্তমানে নিঝুম দ্বীপ খুব পরিচিত ভ্রমণ স্থান। দ্বীপটি মূলত বেশ কিছু চরের সমষ্টি। এর মাঝে বয়ে চলেছে নদী আর খাল, একদিকে ম্যানগ্রোভ বন ও অন্যদিকে বিস্তীর্ণ বালুরাশির এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা বৈচিত্র্যময়, অন্যদিকে পর্যটনের জন্য বড় একটি সম্ভাবনাময় জায়গা এই দ্বীপ। নিঝুম দ্বীপের দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশ জুড়ে রয়েছে এক বিস্তৃত সমুদ্র সৈকত। এদিক থেকে বিবেচনা করলে নিঝুম দ্বীপ সুন্দরবন, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও কুয়াকাটা র মতো একটি মনোরম পর্যটনকেন্দ্র হতে পারে। যাতায়াতব্যবস্থার উন্নয়ন, বিনোদনসহ নিরাপত্তার সুব্যবস্থা থাকলে দ্বীপে পর্যটক-সমাগম বাড়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। সময়ের সঙ্গে বাড়তে বাড়তে আজ বিশাল এক ভূখন্ডে পরিণত হয়েছে এবং ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা এ দ্বীপ বাংলাদেশের মানচিত্রে বেশ ভালোই প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যায়।