বিনা অপারেশনে পাইলস ভালো করার উপায়

সুপ্রিয় বন্ধুরা,

আজ একটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি,

সেটা হল বিনা অপারেশনে কিভাবে আপনি আপনার পাইলসের সমস্যার সমাধান করতে পারেন।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে,

“ কয়েক আউন্স ভুষির অভাবে আজ ইউরোপের ইতিহাস অন্যভাবে রচিত হত।  কারণ ওয়াটারলুর যুদ্ধে নেপোলিয়ন পাইলসে আক্রান্ত থাকায় সঠিক নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয়নি। “

খাদ্যে আঁশ জাতীয় খাবার কম থাকায় নেপোলিয়ান তীব্র ফাইলস সমস্যায় ভুগছিলেন বলেই এই উক্তিটি করা হয়েছে।

একজন রোগীর মলদ্বারে চুলকানি ব্যাথা ফুলে যাওয়া রক্ত পড়া ইত্যাদি সাধারণভাবে শরীরে অশ্ব বা পাইলস রোগের উপসর্গ । এ সমস্যাটি যেকোনো বয়সেই হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৪.৪% লোকের পাইলসের সমস্যা রয়েছে।  পঞ্চাশোর্ধ লোকদের ৫০% পার্সেন্ট কোন না কোন সময় পাইলস এর উপসর্গ অনুভব করেন। উচ্চবিত্তদের এইডস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

কেন পাইলস  হয় ?????

পাইলস বিশেষ কোন একটা কারণের জন্য হয়না।

অনেকগুলো কারণ একসাথে এর জন্য দায়ী।

যার অন্যতম হচ্ছে উত্তরাধিকার সুত্রে,

গঠনগত বৈশিষ্ট্য,

পুষ্টি,

আবহাওয়া,

মানসিক সমস্যা,

বার্ধক্য,

হরমোনের পরিবর্তন,

খাদ্য ও ওষুধ সংক্রমণ,

অন্তঃসত্ত্বা,

মলত্যাগের শক্তিপ্রয়োগ,

বমি,

কুষ্ঠ কাঠিন্য,

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহের গঠন কে ধরে রাখার টিস্যু ক্ষয় হতে থাকে।  যার কারণে মলদ্বারের ভিতর থেকে জুলে পড়তে থাকে। এমন অবস্থায় শিরাগুলো দুর্বল হতে থাকে এবং এক সময় ছিড়ে গিয়ে রক্তপাত হতে থাকে।

পাইলস রোগের উপসর্গ বা লক্ষণগুলো

এই রোগের  রোগীরা অনেক ক্ষেত্রে মলদ্বার দিয়ে  রক্ত পড়ার অভিযোগ করে থাকে। এটি সাধারণত মলত্যাগের সময় অথবা তারপরে হয়ে থাকে।

মল ত্যাগের সময় প্রচুর শক্তি প্রয়োগ করা অথবা বারবার মল ত্যাগ করলে রক্ত যাবার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

একটা সময় দেখা যেতে পারে অতিরিক্ত রক্ত যাবার কারণে তীব্র রক্তশূন্যতা দেখা দিয়েছে।

পাইলসের সাধারণত ব্যাথা হয়না।  কিন্তু যদি রক্ত জমাট বাঁধা পড়ে তখন ব্যাথা হতে পারে।

মলদ্বারে ব্যথার প্রধান কারণ,

এনাল ফিসার মলদ্বারের ভিতর থেকে মাংসপিণ্ড ঝুলে পড়া বা গ্যাস বের হওয়া,  একটি সাধারণ ঘটনা।  এটি হলে কখনো কখনো হাত দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দিতে পারা যায়।

এমন হতে পারে যে এটা বাইরে ঝুলে আছে এবং কখনোই বেড়ে যায় না।  মাঝেমধ্যে মলদ্বারে চুলকানি হতে পারে।

পাইলসের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না।  কিন্তু ঘন ঘন পায়খানা হলে অথবা ব্যথা জ্বালাপোড়া করলে অনেকে টয়লেটে যেতে চান না।যার জন্য আস্তে আস্তে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

মলদ্বারে রক্ত পড়ার অনেক কারণ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হচ্ছে পায়ুপথের ক্যান্সার।

চিকিৎসা পদ্ধতি

বৃহদান্ত্রের ভিতরে যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা করতে হয় ।এন্ডোস্কপি  যন্ত্র দিয়ে মলদ্বার ও পায়ুপথের নিচের দিক পরীক্ষা করতে হয়।

রোগী যদি ৫০ বছর বয়সের হয় এবং যদি  বৃহদান্ত্র ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত কিছু ব্যবস্থা করা  উচিত।

চিকিৎসা প্রতিরোধ কিছু অভ্যাস এবং পরামর্শ

চিকিৎসা প্রতিরোধ কিছু অভ্যাস এবং পরামর্শ পালন করলে পাইলস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

আঁশ জাতীয় খাবার না খাওয়া ভালো।

আফ্রিকায় কিছু সম্প্রদায় আছে যারা মূলত শাকসবজি ও ফলমূল এর উপর নির্ভর করে। এদের দেখা যায় ন টয়লেটে অনেকক্ষণ বসে থাকতে। এবং সেখানে তারা বই পড়ে বা অহেতুক দীর্ঘক্ষণ বসে থাকে।এটা  উচিত নয়।

কুষ্ঠ কাঠিন্য বা পাইলস এ  সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা করা  উচিত।খাসির মাংস খাওয়া উচিত নয়। আমাশয় চিকিৎসা যথাসময়ে করা উচিত।এ সবের  বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন চিকিৎসা রয়েছে।

যদি কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় তার চিকিৎসা করতে হবে যেমন ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা বৃহদান্ত্রের অন্য কোন রোগ আছে কিনা অবশ্যই দেখে নিতে হবে।

আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে বিনা অপারেশনে ৮০ থেকে ৯০  পার্সেন্ট পাইলসের চিকিৎসা করা যায়।

এ পদ্ধতিতে ছোট যন্ত্রের সাহায্যে পাইলসের চিকিৎসা করলে সপ্তাহখানেকের ভিতর পাইলসের মাংসপিন্ডের সংক্রিয়ভাবে ফেটে পড়ে যায়। এ চিকিৎসার সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনরূপ ব্যাথা হয়না।

কোন অনবিজ্ঞ দাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করার প্রয়োজন নেই।

প্রখ্যাত আমেরিকান সার্জন ডাক্তার মারভিন ফরমান ও ডক্টর ডি এস এই  পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে বলেন,

এই পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে ৭০  থেকে ৮০  পার্সেন্ট রোগী বিনা অপারেশনে ভালো হয়েছে।

এ চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহারের পূর্বে  ভালো করে পরীক্ষা করে নিতে হয়। যেহেতু আমাদের শরীরে প্রধান তিন ধরনের পাইলস আছে।

অতএব সর্বোচ্চ তিনবার চিকিৎসা করাতে পারবেন । এই চিকিৎসার মাধ্যমে  সাধারণত তিন থেকে চার সপ্তায় রোগী ভালো হয়।  আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি অনেক রোগী চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়েছে। পাইলস অপারেশন কেন বিপদ জনক

পাইলস অপারেশন কেন বিপদ জনক

অপারেশনে  সাধারণত  ১০ ভাগ মানুষ সুস্থ হয়। যদি আমাদের পরামরশ মতো কাজ করেন তাহলে পাইলস রোগের জপ্ন্য অপারেশন লাগবেনা। কারন অপারেশন পাইলস ক্যান্সারের জন্য দায়ী।

অপারেশনে রোগীর মলদ্বারের গঠন প্রণালী ভীষন ভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়। আমি সাধারণত দেখেছি পাইলসের অপারেশন করার পরেও এর বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।

তাই অপারেশনে না গিয়ে আমাদের পরামরশ গুল মেনে চলার চেষ্টা করুন। সুন্দর জীবন কাঠান।