ত্বকের যত্নে কয়লার ব্যবহার শুনলে অনেকেই হয়তো চমকে যাবেন। কিন্তু অবাক হওয়ার কিছুই নেই বন্ধুরা এক্টিভেটেড চারকোল বা । সুপ্রিয় কয়লা সাধারন কোন কয়লা নয়। বিভিন্ন উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করে । সক্রিয় কয়লা বা এক্টিভেটেড চারকোল তৈরি করা হয়। ত্বকের যত্নে এর অনন্য উপকারিতার কারণেই বহুকাল ধরে এক্টিভেটেড চারকোল বেশ জনপ্রিয়। এক্টিভেটেড চারকোল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি হওয়ায় এটি ব্যবহারে কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া সম্ভাবনা থাকেনা। তাই আমাদের মধ্যে যারা সঠিক পদ্ধতিতে এক্টিভেটেড চারকোল ব্যবহার করতে জানেন না তাদের জন্য শেয়ার করছি । এক্টিভেটেড চারকোল এর অত্যন্ত কার্যকরী কিছু জাদুকরী ব্যবহার পদ্ধতি। যা ব্যবহারে অতি দ্রুত সময়ে আপনার মুখের ব্রণ ও ব্রণের দাগ দূর হয়ে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও ফর্সা। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক ত্বকের যত্নে এক্টিভেটেড চারকোল এর অত্যন্ত জাদুকরী কিছু ব্যবহার পদ্ধতি।
এক্টিভেটেড চারকোল এবং মধুর ফেস মাস্কঃ
ব্যবহৃত উপাদানঃ
1 চা-চামচ মিহি এক্টিভেটেড চারকোল পাউডার।
1 চা চামচ মধু।
আধা চা চামচ লেবুর রস।
পরিমাণমতো গোলাপজল।
ফেস মাস্ক তৈরির প্রক্রিয়াঃ
প্রথমে এক্টিভেটেড চারকোল পাউডার, মধু এবং লেবুর রস ভালোভাবে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করুন। তার সাথে পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে নিন।
তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে ব্রণের ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করে ত্বক ফর্সাকারী অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফেস মাস্ক।
ত্বকের যত্নে চারকোল পাউডার এর ফেস মাস্ক ব্যবহারের প্রক্রিয়াঃ
প্রথমে সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালোভাবে পরিস্কার করে নিন।
এবার তুলা অথবা পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে ফেস মাস্ক টি সম্পূর্ণ মুখে স্ক্রাব করে লাগিয়ে নিন।
3 থেকে 5 মিনিট আলতোভাবে ঘষে ঘষে ত্বকের ওপর ম্যাসাজ করুন।
এরপর 20 থেকে 25 মিনিট শুকানোর জন্য সময় দিন।
সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে পানিতে তুলা ভিজিয়ে ঘষে ঘষে মিশ্রণটি তুলে নিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
এক্টিভেটেড চারকোল ফেস মাস্ক এর উপকারিতাঃ
ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
বন্ধ হয়ে যাওয়া লোমকূপ পরিষ্কার করে।
ব্রণ এবং ব্রণের দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করে।
ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখে।
ত্বক কে গভীর থেকে উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তোলে।
এক্টিভেটেড চারকোল পাউডার এবং অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এর ফেস মাস্কঃ
ব্যবহৃত উপাদানঃ
এক চা-চামচ এক্টিভেটেড চারকোল পাউডার।
আধা চা-চামচ অ্যাপল সিডার ভিনেগার।
একটি অর্ধেক পাকা টমেটোর পেস্ট।
1 চা চামচ অলিভ অয়েল।
ফেস মাস্ক তৈরির প্রক্রিয়াঃ
একটি পরিষ্কার পাত্রে উপরে উল্লেখিত সবগুলো উপকরণ পরিমাণ মতো নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করে নিন।
তাহলেই তৈরি হবে অত্যন্ত কার্যকরী চারকোল পাউডার এর একটি ফেস মাস্ক।
ত্বক উজ্জল ও ফর্সা করতে চারকোল পাউডার এর ফেস মাস্ক ব্যবহারের পদ্ধতিঃ
প্রথমে ক্লিনজার দিয়ে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিন।
এরপর তুলা অথবা পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে ফেস মাস্ক এর মিশ্রন সম্পূর্ণ মুখে ভালভাবে লাগিয়ে নিন।
5 থেকে 7 মিনিট আলতোভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ত্বকের ওপর ম্যাসাজ করুন।
15 থেকে 20 মিনিট অপেক্ষা করুন।
এরপর পানিতে তুলা ভিজিয়ে মিশ্রণটি ঘষে ঘষে তুলে নিয়ে প্রচুর পরিমান জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
ত্বকের যত্নে ফেসওয়াশ ব্যবহারের উপকারিতাঃ
ত্বকের মৃত চামড়া এবং কোষ দূর করবে।
ত্বক কে গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজ করবে।
ত্বকের ফাইন লাইন রিংকেল দূর করবে।
লালচে ভাব দূর করবে।
ব্রন ও ব্রনের দাগ সম্পূর্ণরূপে দূর করবে।
ত্বক অতিমাত্রায় উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়ে উঠবে।
বিঃদ্রঃ
চারকোল পাউডার এর ব্যবহৃত কোন উপকরণ আপনার ত্বকের জন্য এলার্জিক হলে তা ব্যবহার করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।
ফেস মাস্ক লাগিয়ে রোদে গরম স্থানে ধুলাবালি যুক্ত স্থানে যাবেন না।
অপ্রাপ্তবয়স্কদের ত্বকে ফেস মাস্ক ব্যবহার করবেন না।
ত্বক ম্যাসাজ করার সময় অতিরিক্ত প্রেসার দিবেন না।
ফেস মাস্ক ব্যবহারের পর ত্বক অবশ্যই মশ্চারাইজ করে নিবেন।
এক্টিভেটেড চারকোল পাউডার ত্বকের যত্নে খনিজ উপাদান সম্পন্ন অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপকরণ । এটি ব্যবহারে আপনার ত্বক অতি দ্রুত সময়ে ব্রণ মুক্ত এবং দাগ মুক্ত উজ্জ্বল ও ফর্সা হয়ে উঠবে। তাই স্থায়ীভাবে আকর্ষণীয় ত্বক লাভ করতে সপ্তাহে অন্তত দুবার এক্টিভেটেড চারকোল পাউডার এর জাদুকরী ফেস মাস্ক সমূহ ব্যবহার করুন।
ধন্যবাদ।