মসুর ডাল সাধারণত একটি ডাল সমৃদ্ধ খাবার। অনেক আগে থেকে খাদ্যে প্রোটিনের তালিকা হিসেবে মসুর ডাল যোগ হয়েছে। ডাল আমাদের শরীরের পুষ্টিগুণ জমায়। আগের কাল থেকে যেহেতু পুষ্টিগুণ খাদ্য হিসেবে ডাল ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে আগের কাল থেকে নারীরা এই ডাল কে রূপচর্চার উপাদান হিসেবে ব্যবহার করছে। আর তাদের ত্বক ও ছিলো দেখার মতন সুন্দর, উজ্জ্বল ও টান টান। কেননা তাদের ত্বকে ক্যামিকেল এর ছোঁয়া পায়নি। তারা প্রাকৃতিক উপায়ে তাদের রূপচর্চা করত। এই মসুর ডাল বাটনা ত্বকের অনেক সমস্যা সমাধান করত। অবাঞ্ছিত লোম দূর করা, মুখের উজ্জ্বলতা, ত্বক টান টান ইত্যাদি সকল কিছুই এই মসুর ডাল দিয়ে সমাধান হয়ে যেত। আর ত্বক পরিষ্কার থাকার ফলে মুখে ব্রণ ও উঠত না। আসুন জেনে নেই এই মসুর ডাল দিয়ে সহজ কয়েকটি ফেইস প্যাক যা আমাদের ত্বকের সৌন্দর্য রক্ষার্থে সাহায্য করবে।
১।মসুর ডালের সাথে মধু মিশিয়ে একটি দারুণ ফেইসপ্যাক বানানো যায়। যাদের ড্রাই স্কিন তাদের জন্যে মসুর ডাল একটি ধারুণ ফেস প্যাক। মসুর ডালের সাথে মধু মিশয়ে ব্যবহার করলে এই প্যাক ত্বকের মৃতকোষ দূর করে আর ত্বককে রাখে সফট আর শাইনিং। সাথে স্কিনের স্মূদ নেস ও বাড়বে। এক্ষেত্রে আপনি যেভাবে ফেস প্যাক বানাবেন তা হলো প্রথমে ১চা চামচ মধু আর মসুর ডাল বাটা নিবেন ১ চা চামচ। ভালোভাবে মিশিয়ে নিবেন। তার পরে ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে সেখানে সেখানে মুখে লাগাতে হবে। লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিয়ে এইবার হালকা হালকা ভাবে ঘষে তুলে নিতে হবে। তারপর ভালোভাবে পানি দিয়ে মুখ ধুহে ফেলতে হবে। এই প্যাক টি আপনি সহযে ব্যবহার করতে পারবেন।
২।মসুর ডাল, টক দই আর বেসন দিয়ে একধরণের উপটান বানিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। অনেকে আছেন যারা চাই ত্বক ফর্সা করতে কিংবা ব্রণ থেকে দূরে থেকে স্কিন কে সুন্দর করতে তাদের জন্যে এই উপটান প্যাক টি বিশেষ কাজে দেয়। এই প্যাক বানাতে আপনি প্রথমে আপনার ত্বকের পরিমাণ মসুর ডাল বাটা নিবেন আর সাথে পরিমাণ মতো টক দই আর বেসন একসাথে মিশিয়ে নিন। চাইলে আপনি ১ চিমটি হলুদ গুঁড়া ও মেশাতে পারেন। এইসব গুলোর মিশ্রণ করে এইবার পরিষ্কার ত্বকে লাগান। তারপর শুকিয়ে গেলে ভেজা হাত দিয়ে ম্যাসাজ করে আস্তে আস্তে তুলে ফেলুন। দেখবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। আর যদি শরীরে ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান তাহোলে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারবেন।
৩।দুধ ও মসুর ডালের সাথে মিশিয়ে একটি দারুণ এক্সফলিয়েটর তৈরি করা যায়। যারা সিম্পল বা সাদাসিধে ত্বক কিন্তু ত্বকে কার্যকর এক্সফলিয়েশন পছন্দ করেন তাদের জন্যে এই মসুর ডাল দারুন এক উপাদান। সাধারণত এই ডাল মুখের মৃতকোষ সরিয়ে মুখের ত্বক উজ্জ্বল আর স্মুদ করবে। আর দুধে তো রয়েছে ল্যাকটিক এসিড। যা এমনিতেই ত্বককে কোমল, আরামদায়ক ও ফর্সা করে তোলে। এই দুধের আর মসুর ডালের প্যাক বানাতে আপনি প্রথমে মসুর ডালকে বেটে এর সাথে এক চা চামচ দুধ মিশিয়ে নিন। এইবার আপনার কোমল হাতে মুখে ঘষে ঘষে এই মিশ্রণ ম্যাসাজ করুন। এরপর পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন যাতে করে মুখে লেগে না থাকে।
৪।মসুর ডালের মাধ্যমে হেয়ার রিমুভাল এর অসাধারণ প্যাক। তবে একেবারে যে আপনার অবাঞ্ছিত লোম তুলে ফেলবে তা নয়। আপনি যখন নিয়মিত ব্যবহার করবেন তখন সেই অবাঞ্ছিত লোমের গ্রন্থির গুলো বন্ধ হয়ে যাবে আর গ্রোথ কমে যাবে। আর সাথে ত্বকে উজ্জ্বলতা ও বাড়াবে। এই ফেস প্যাক বানাতে আপনি ১চা চামচ মসুর ডাল বাটা, মিহি করা ১চা চামচ চালের গুঁড়া আর ১চা চামচ বেসন এবং সাথে ২ থেকে ৩ফোটা আমন্ড অয়েল একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগান। এবং ১০ মিনিট পরে আস্তে আস্তে তুলে ফেলুন।
৫।মসুর ডাল আর গাঁদা ফুল দিয়েও দারুণ ভাবে ফেসপ্যাক বানানো যায়। গাঁদাফুল আমাদের দেশে খুব সহযে পাওয়া যায়। অর্থাৎ এটি একটি সহজলভ্য ফুল। তবে এই ফুল শুধু আপনার বাগানের সৌন্দর্য্যই বাড়ায় তাই নয় সাথে আপনার এতে আছে ত্বকের যত্নের নানা উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই ফেস প্যাক বানাতে আপনি প্রথমে একটি বাটিতে মসুর ডাল বাটা আর গাঁদাফুলের পাপড়ি কে বেটে একসাথে মিশিয়ে নিন। এইবার এই প্যাক ভালোভাবে মুখে লাগান। যদি গোলাপফুল থাকে তাহোলে তো কথা নেই। গোলাপ ফুলের পাঁপড়িকেও বেটে মুখে লাগান। দেখবেন ত্বক গোলাপি হয়ে গেছে
উপরে ৫টি সহজ পদ্ধতি দেখানো হয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি খুব সহযে মসুর ডালের ৫টি ফেস প্যাক বানাতে পারবেন। এই ফেস প্যাক গুলো ত্বকে ব্যবহার ও করতে হবে। তবে নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে হবে।