আজ আপনাদেরকে যে বিষয়ে কথা বলব সেটি হলো ত্বক ফাটা কি??? কেন ফাটে??? এবং এর থেকে প্রতিকার বা এইগুলো পরিত্রান করার উপায় গুলো কি কি??
ত্বক ফাটা বা চামড়া ফাটা কি???
বন্ধুরা মহিলাদের ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় ফাটাদাগ দেখা যায়। মহিলাদের শরীরে যে স্বাভাবিক ত্বক বা চামড়া রয়েছে মাঝে মাঝে এমন দেখা যায় যে শরীরের মধ্যখানে লালচে দাগ দেখা যায়।এ দাগ প্রথমে সাদা রঙের,পরে এটা কখনও কখনও কালো হয়ে যায়, এই ধরনের অস্বাভাবিক দাগ আমাদের ত্বকের উপর একাধিকবার দেখা গেলে বা আড়াআড়িভাবে এ ধরনের দাগ দেখা গেলে আমরা তাকে বলি ত্বক ফাটা বা চামড়া ফাটা।
শরীরের কোন কোন অংশের ত্বক ফাটেঃ
এ ধরনের ত্বক ফাটা বা চামড়া ফাটা আমাদের শরীরের যে সকল অংশে বেশি দেখা যায়………
- পেটের চামড়ায় এই ধরনের ত্বক ফাটা বেশি লক্ষ্য করা যায়।
- ঘাড়ে,
- বগলের নিচে,
- উরুতে, এই ধরনের ত্বক ফাটা বা চামড়া ফাটা দাগ দেখা যায়।
এই ধরনের ত্বক ফাটা চামড়া ফাটা কেন হয়ঃ
বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ অনেক উপায় বা অনেক কারণ বের করেছে কেন এই ধরনের ত্বক আমাদের ফেটে যায়। আজ আপনাদের সাথে সে সকল কারণ গুলো শেয়ার করবো।
যে সকল কারণগুলো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ বিভিন্ন সভা-সেমিনারে বলে থাকেন, বন্ধুরা তাহলে আসুন জেনে নিন সেই কারণগুলো কী কী………
- হরমোনজনিত কারণে এই ধরনের ত্বক ফাটা বা চামড়া ফাটা হয়ে থাকে।
- বয়সন্ধিকালে এই ধরনের ত্বক ফাটা বা চামড়া ফাটা হয়।
- গর্ভধারণ কালীন সময়ে এ ধরনের সমস্যা হতে পারে।
- এছাড়া আরো বিভিন্ন কারণে এ ধরনের সমস্যা হয়। যেমন…
- হঠাৎ করে ওজন বেড়ে গেলে বা হঠাৎ করে ওজন হ্রাস পেলে।এই ধরনের সমস্যা হতে পারে।
এখন আমরা জানবো বন্ধুরা এই ধরনের সমস্যা গুলো হলে সমাধান বা প্রতিকার ঘরোয়া ভাবে কিভাবে করা যায়।
মহিলাদের ত্বক ফাটা ঘরোয়া ভাবে প্রতিকার করার উপায়ঃ
আপনাদের সুন্দর স্বাভাবিক চামড়ার ওপর এই ধরনের আচড় সত্যিই আপনাদেরকে হতাশ করে ফেলে। এখন আপনারা বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল এবং ওষুধ ব্যবহার করতে চান না, যাতে করে কোনো সাইডএফেক্ট আসে।
তাই বন্ধুরা, আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কোন ধরনের সাইডএফেক্ট ছাড়া সম্পূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে দীর্ঘস্থায়ীভাবে কিভাবে এই ধরনের দাগ গুলো থেকে নিজেকে পরিত্রান করতে পারবেন।
এখন জেনে নেওয়া যাক ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফাটা বা চামড়া ফাটা কিভাবে আপনারা প্রতিরোধ করবেন……………
- প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। প্রতিদিন স্বাভাবিক মানুষ যে পরিমান পানি খায় তার চেয়ে বেশি পরিমাণে পানি খেতে হবে। পানি ত্বকের অনেক বেশি পুষ্টি যোগায়। পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভাবে চোখের ভিতর মসরাইজার সৃষ্টি করতে সহায়তা করে।
- যেকোনো ধরনের মসরাইজার আমাদের ত্বকের উপর সব সময় লাগিয়ে রাখতে হবে, যাতে করে আমাদের ত্বকের উপরে আদ্রতার কোন অভাব না হয় এবং এতে করে চামড়া ফাটা যাতে বৃদ্ধি না পায়।
এখন একটি প্রাকৃতিক উপায় বা ঘরোয়া উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করব, দৈনিন্দিন জীবনে প্রতিদিন যদি আপনারা এই ধরনের প্যাক গুলো আপনাদের শরীরে ব্যবহার করেন তাহলে এই ধরনের সমস্যা থেকে আপনারা নিজেদেরকে পরিত্রান করতে পারবেন।
- ত্বকের ফাটা দাগ দুর করতে ডিম ও মধুর মিশ্রণঃ
এখন আপনারা যে প্যাক টি তৈরি করবেন তার জন্য আপনার লাগবে একটি ডিম আর কিছু পরিমাণ মধু।
এটি কিভাবে তৈরি করবেনঃ
একটি বাটিতে ডিমের হলুদ অংশ ফেলে দিয়ে সাদা অংশ নিন, তার সাথে মধু মিক্স করবেন। ভালো মতো মিক্সার দিয়ে মিক্স করে নিন। এরপরে আপনার যেখানে দাগ আছে সেখানে ভালো মতো ম্যাসাজ করুন এবং লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে হালকা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তারপর হাতের কাছে যেই কোনো ভালো একটি মসরাইজার থাকলে তা লাগিয়ে নিন। বন্ধুরা নিয়মিত এই প্যাক টি ব্যবহার করলে আপনার ত্বক ফাটা প্রতিরোধের সাথে সাথে আপনার ত্বক কে রাখবে ঠান্ডা এবং অনেক বেশি উজ্জ্বল এবং চিরস্থায়ী ভাবে আপনি আপনার ত্বক থেকে এই ফাটা দাগ দূর করতে পারেন।
- পেটের ফাটা দাগ দুর করতে এলোভেরা,চিনি ও লেবুর রসের মিশ্রনঃ
এ প্যাকটি তৈরি করার জন্য আপনার যে সকল উপকরণ দরকার হবে… এলোভেরা জেল, মধু, চিনি ও লেবু।
যেভাবে এই প্যাকটি তৈরি করতে হবেঃ
একটি বাটিতে অ্যালোভেরা জেল, লেবুর রস ও চিনি পরিমাণমতো নিয়ে তাতে পানি বা গোলাপ জলের মিশ্রণ ঘটিয়ে উপকরণ ভালোমতো মিক্সার করে পেটের উপরে রেখে কিছু পরিমাণ সময় নিয়ে আমাদের শরীরের ফাটা স্থানে মাসাজ করতে হবে। ২০-২৫ মিনিট রাখতে পারি এবং সেটা যদি নিয়মিত করতে পারি তাহলে আমাদের পেটের দীর্ঘস্থায়ী যেসকল ফাটা দাগ রয়েছে তা চিরদিনের জন্য চলে যাবে।
- উরুর ফাটা দাগ দুর করতে অলিভ অয়েল ও পাকা কলার মিশ্রনঃ
এই প্যাকটি তৈরি করতে আমাদের যে সকল উপকরণ লাগবে…অলিভ অয়েল,পাকা কলা। সাথে যদি লেবুর রস দেওয়া যায় তাহলে উপকরণটি একেবারে পারফেক্ট হয়।
যেভাবে এই প্যাকটি তৈরি করতে হয়ঃ
সবগুলো উপকরণ একসাথে নিয়ে ব্লেন্ড করে ফেললে বা একসাথে নিয়ে হাতে কচলে ভালোমতো মিশ্রণটি তৈরি করে শরীরের ত্বকের যে সকল অংশ ফেটে গেছে তার ওপর লাগিয়ে নিতে হবে। গোসলের আগে লাগালে ভালো হয়। ২০ মিনিট লাগিয়ে নেওয়ার পর ঠান্ডা জল বা হালকা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি যদি নিয়মিত ব্যবহার করতে পারা যায় তাহলে প্রাকৃতিক ঘরোয়া পদ্ধতিতে চিরদিনের জন্য সম্পূর্ণভাবে এই ধরনের ফাটা, অবাঞ্ছিত দাগ আমাদের ত্বক থেকে চলে যাবে।
তাহলে বন্ধুরা কোন ধরনের ফাটা দাগ নিয়ে আর হতাশায় না ভুগে আমাদের দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী প্যাক গুলো ব্যবহার করুন।