বর্তমান সময়ে ত্বকের যত্নে আমরা অনেক ধরনের কেমিক্যাল যুক্ত ক্রিম ব্যবহার করে থাকি। যার ফলে সাময়ীকভাবে ত্বকের যত্ন লাভ হল দীর্ঘস্থায়ীভাবে আমরা নিজেদের অজান্তেই ত্বকের নানা ধরনের ক্ষতি সাধন করছি। তাই ডাক্তার এবং বিউটিশিয়ানরা কেমিক্যাল এর পরিবর্তে রূপচর্চা এবং ত্বকের যত্নের জন্য প্রাকৃতিক উপাদানের উপর নির্ভর হওয়ার জন্য অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করছেন।
ত্বকের যত্নে ঠিক তেমনি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বিটরুট। যা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত। বর্তমান সময়ে রূপচর্চায় এবং ত্বকের যত্নে বিটরুট বহুলাংশে ব্যবহৃত হলেও অনেকেই বিটরুট এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন না। তাই আমরা আজকের আলোচনা সাজিয়েছি ত্বকের যত্নে বিটরুটের অবর্ণনীয় উপকারিতা সমূহ নিয়ে। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক ত্বকের যত্নে বিটরুট এর উপকারিতা।
বিটরুট কিঃ
বিটরুট হচ্ছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান সম্বলিত এক ধরনের ভেষজ উদ্ভিদ যা আমাদের ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এ,সি, ক্যালসিয়াম এবং আয়রন সহ নানান প্রাকৃতিক উপাদান। বিট রুটের পাতা এবং মূল বা শিকড় সাধারণত ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হয়। সর্বোপরি সুস্থ সুন্দর এবং উজ্জ্বল ত্বকের যত্নে বিটরুট এর গুরুত্ব অপরিসীম।
ত্বকের যত্নে বিটরুট এর উপকারিতা সমূহঃ
ত্বকের যত্নে বিটরুট এর উপকারিতা সমূহ অবর্ণনীয় তার মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলোচনা করা হলো।
ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে বিটরুট উপকারীঃ
বিটরুটে বিদ্যমান ভিটামিন সি ত্বকে প্রবেশের সাথে সাথে ত্বকের স্ক্রীন সেলের বৃদ্ধি ঘটে। ফলে এর এন্টিঅক্সিডেন্ট বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ভাব কমে যায় এবং ত্বক হয়ে ওঠে টানটান ও মসৃণ। ফলে আপনার ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে বিটরুট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ত্বকের যত্নে দাগ নিরাময়ে বিটরুটঃ
বিটরুটের বিদ্যমান বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদান আপনার ত্বকে গিয়ে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সমূহ দূর করে এবং ত্বককে গভীর থেকে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে। ত্বকের সমস্ত দাগ নির্মূল করতে সাহায্য করে। বিটরুট ব্যবহারের পাশাপাশি বিটরুটের রস পান করলেও ত্বকের দাগ দূর হয়।
বিটরুট ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করেঃ
শুষ্ক ত্বকের জন্য অতিরিক্ত শুষ্ক ভাব দূর করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে বিটরুট অত্যন্ত উপকারী। ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে ত্বকের মসৃণতা চলে আসে বিটরুট ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে মলিনতা দূর করে। আপনার ত্বককে করে তোলে উজ্জ্বল ফর্সা এবং আকর্ষনীয়।
ব্ল্যাকহেডস দূর করতে বিটরুটঃ
ব্ল্যাকহেডস আমাদের সৌন্দর্যের অন্তরায় । চোখের চারপাশের কালো দাগের জন্য আমাদের হীনমন্যতায় ভুগতে হয়। নিয়মিত বিটরুটের রস চোখের চারপাশে দিলে ব্ল্যাকহেডস থেকে রেহাই পাওয়া যায়। যার ফলে আপনার চোখ হয়ে ওঠে আকর্ষণীয়।
স্কিন কেয়ার হিসেবে বিটরুটঃ
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন গবেষক এবং বিউটিশিয়ানরা স্কিন কেয়ার হিসেবে বিটরুটের রস সাজেস্ট করে থাকেন। কেননা এতে রয়েছে বিভিন্ন প্রাকৃতিক এবং খনিজ উপাদান। যা আমাদের ত্বকের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। সাথে সাথে আমাদেরকে করে তুলে গভীর থেকে স্থায়ীভাবে ফর্সা এবং উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী।
ত্বকের পোড়া ভাব কমাতে বিটরুটঃ
বিটরুটের বিদ্যমান ভিটামিন-সি ত্বকের নতুন স্ক্রিন সেল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এর ফলে ত্বকের পোড়া ভাব এবং বিভিন্ন দাগ দূর হয় । তাই নিয়মিত বিটরুট এর ব্যবহারের ফলে ত্বকে অতিরিক্ত পোড়া ভাব দূর হয়।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিটরুটঃ
বিটরুট ত্বকের দাগ নিবারণ করে ত্বককে করে দাগহীন। ত্বককে গভীর থেকে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে ত্বকের আর্দ্রতা সবসময় বজায় রাখতে সাহায্য করে । বিটরুট ত্বককে করে তোলে কোমল এবং আকর্ষনীয় ও সুস্থ। তাই সর্বোপরি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিটরুট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ত্বকের যত্নে ব্রণ দূর করতে বিটরুটঃ
যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত তাদের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্রণ ওঠে। অথবা বিভিন্ন কারণে যেমন অতিরিক্ত ধুলাবালি,ময়লা, রোদ ইত্যাদি কারণে যাদের ব্রণ ওঠে তারা বিটরুট কে সঠিক সমাধান হিসেবে বেছে নিতে পারেন। কারণ বিটরুট অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে ত্বকের আদ্রতা বজায় রাখে এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া সমূহ দূর করে ত্বককে দূষণমুক্ত করে ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। সেইসাথে বিটরুট ব্রণের দাগ নির্মূল করতে সাহায্য করে।
মসৃণ এবং কোমল ত্বকের যত্নে বিটরুটঃ
বিটরুট ত্বকের গভীরে গিয়ে ত্বকের মসৃণতা এবং কোমলতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেইসাথে স্ক্রিন সেল বৃদ্ধির মাধ্যমে ত্বককে করে তোলে স্হায়ী ভাবে উজ্জ্বল, ফর্সা, কোমল এবং অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
বিটরুট আপনার ত্বকের জন্য এলার্জিক কিনা সেটি জেনে নিন যদি এলার্জিক হয়ে থাকে তাহলে বিটরুট ব্যবহার করবেন না।
সুপ্রিয় বন্ধুরা , তাই ত্বকের যত্নে এবং সুস্থ-সুন্দর কোমল মসৃণ ও সতেজ ত্বক পেতে চাইলে বিটরুট ব্যবহার করুন। এটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক হওয়ায় এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আপনি ঘরে বসেই নিজের ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন। নিজেদের ত্বকের যত্ন নিন।
ধন্যবাদ।