রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকের যত্নে আলমন্ড অয়েলের ব্যবহার । যা না জানলেই নয়।

আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যাদের সব ঋতুতেই ত্বক রুক্ষ এবং শুষ্ক থাকে। অন্যান্য ত্বকের সুরক্ষা এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য একটু বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হয়। এমন অনেকেই আছেন যারা রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকে না জেনেই কেমিক্যালযুক্ত বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যাবহার করে ত্বকের আরো ক্ষতি সাধন করে বসেছেন। তাই অনেকেই ঘরে বসে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে শুষ্ক এবং রুক্ষ ত্বকের যত্ন নিতে উপায় খুঁজছেন। তাই সুপ্রিয় বন্ধুরা আপনাদের জন্য শেয়ার করছি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক গুণাগুণ সমৃদ্ধ আলমন্ড  অয়েল এর তৈরি অত্যন্ত কার্যকরী কিছু ফেইসপ্যাক । যা ব্যবহারে আপনার রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বক হয়ে উঠবে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে ময়েশ্চারাইজড এবং কোমল, মসৃণ ও আকর্ষণীয়। আমন্ড অয়েল সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান হওয়ায় এটি ব্যবহারে আপনার ত্বকে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। তাহলে চলুন বন্ধুরা দেখে নেয়া যাক রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী আলমন্ড অয়েলের কিছু ফেসপ্যাক।

 

রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েলের ফেসপ্যাকঃ

 

আলমন্ড অয়েল এবং অ্যালোভেরা ফেসপ্যাকঃ

আমন্ড অয়েল এবং এলোভেরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান।  আলমন্ড অয়েলে   রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, ই ফ্যাটি এসিড এবং প্রোটিন । যা আমাদের শুষ্ক এবং রুক্ষ ত্বকের রুক্ষতা সম্পূর্ণরূপে দূর করে ত্বককে করে তোলে মসৃণ, কোমল এবং  আকর্ষণীয়।

 

উপকরন সমুহঃ

1 চা চামচ আলমন্ড অয়েল।

1 চা-চামচ অ্যালোভেরার জেল।

1 চা চামচ মধু।

আধা চা-চামচ কাঁচা হলুদের গুড়া।

 

ফেসপ্যাকটি তৈরির প্রক্রিয়াঃ

একটি পরিষ্কার পাত্রে সবগুলো উপকরণ পরিমাণ মতো নিয়ে ভালোভাবে পেস্ট করে একটি মিশ্রণ তৈরী করে নিন। তাহলেই আলমন্ডের অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক তৈরি হবে।

 

রুক্ষ ত্বকে আলমন্ড এর ফেসপ্যাক ব্যবহারের নিয়মঃ

মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

পরিষ্কার তোলা অথবা হাতের সাহায্যে সম্পূর্ণ মুখের ফেস মাস্ক ভালোভাবে স্ক্রাব করে লাগিয়ে নিন।

5 থেকে 7 মিনিট আলতোভাবে ঘষে ঘষে মুখের উপর মেসেজ করুন।

15 থেকে 20 মিনিট অপেক্ষা করুন।

মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে পরিষ্কার ঠান্ডা জলে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।

 

রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকে আলমন্ড অয়েল ব্যবহার করার উপকারিতাঃ

ত্বকের রুক্ষতা এবং শুষ্কতা সম্পূর্ণরূপে দূর হবে।

ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখবে।

সানবার্ন বলিরেখা বুড়িয়ে যাওয়া ভাব দূর করবে।

ত্বক কে গভীর থেকে মসৃণ ও কোমল করে তুলবে।

ত্বকের গ্লোয়িং বাড়িয়ে তুলবে।

 

 

আমন্ড অয়েল এবং ডিমের ফেসপ্যাকঃ

শুষ্ক এবং রুক্ষ ত্বকের রুক্ষতা সম্পূর্ণরূপে দূর করতে ডিম এবং আলমন্ড অয়েল এই ফেসপ্যাকটি খুবই কার্যকরী।

উপকরণসমূহঃ

1 চা চামচ আলমন্ড অয়েল।

একটি ডিমের সাদা অংশ।

আধা চা চামচ লেবুর রস।

1 চা চামচ শশার রস।

1 চা চামচ মধু।

 

ফেইস প্যাকটি  তৈরীর প্রক্রিয়াঃ

প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে আমন্ড অয়েল এবং ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে গুলিয়ে মিশ্রণ তৈরী করে নিন। এরপর অন্যান্য উপকরণ গুলো  পরিমাণ মতো দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করে নিন।

 

রুক্ষ ত্বকে ফেসপ্যাক টি ব্যবহারের প্রক্রিয়াঃ

ক্লিনজার অথবা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিন।

তোলা বা পরিষ্কার কাপড়ের সাহায্যে সম্পূর্ণ মুখে ফেসপ্যাক এর মিশ্রন ভালভাবে লাগিয়ে নিন।

5 থেকে 7 মিনিট আলতোভাবে ঘষে ঘষে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে স্ক্রাব করুন।

20 থেকে 25 মিনিট মিশ্রণটি শুকানোর সময় দিন।

ফেসপ্যাকটি সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম জলে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।

 

রুক্ষ ত্বকের যত্নে ফেসপ্যাক টির উপকারিতাঃ

ত্বকের রুক্ষতা সম্পূর্ণ দূর হবে।

ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা দূর হয়ে ত্বক গভীর থেকে ময়েশ্চারাইজড হবে।

ত্বকের বিবর্ণ ভাব দূর হয়ে ত্বক কোমল ও মসৃণ হয়ে উঠবে।

ত্বকে বিভিন্ন ধরনের কালো দাগ, ছোপ ছোপ দাগ, ব্রণের দাগ, বলিরেখা সম্পূর্ণরূপে দূর হবে।

ত্বক গভীর থেকে উজ্জ্বল ফর্সা ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

 

বিঃদ্রঃ

আলমন্ড অয়েল বা আলমন্ড অয়েল এর ফেসপ্যাক এ ব্যবহৃত কোন উপকরণ আপনার ত্বকের জন্য এলার্জিক হলে তা ব্যবহার করবেন না।

ফেসপ্যাক মুখে লাগিয়ে রোদে গরম স্থানে এবং ধুলাবালি যুক্ত স্থানে যাবেন না।

ফেসপ্যাক ব্যবহারের পর অবশ্যই আপনার ত্বকের উপযোগী ময়েশ্চারাইজার ক্রিম লাগিয়ে নিবেন।

ছোটদের ত্বকে আলমন্ড অয়েলের এর ফেসপ্যাক গুলো এপ্লাই করবেন না।

 

 

যে কেউ ঘরে বসে সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে আলমন্ড অয়েল এর ফেসপ্যাক তৈরি করে নিজেদের রুক্ষ এবং শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন। স্থায়ীভাবে ত্বকের রুক্ষতা ও শুষ্কতা দূর করার জন্য এবং ত্বক কে আকর্ষণীয,  মসৃণ,  উজ্জ্বল ও কোমল করার জন্য সপ্তাহে অন্তত দুবার আমন্ড অয়েল এর ফেসপ্যাক গুলো ব্যবহার করুন।

ধন্যবাদ