রুক্ষ-শুষ্ক ত্বকের যত্ন নিন প্রাকৃতিক উপায়ে! ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েল

আমন্ড অয়েলের গুণাগুণ সম্পর্কে আমরা কমবেশি সবাই জানি! আমাদের ত্বক এবং চুলের জন্য এর কার্যকারিতা কম কিছু নয়। অর্থাৎ ত্বকের যত্নে ও আমন্ড অয়েল বিশেষভাবে সাহায্য করে। সাথে সাথে চুলের যত্নে ও আমন্ড অয়েল অনেকটা ম্যাজিকের মতোই কাজ করে। আমার মা ছোটবেলা থেকেই আমার চুলে বাদাম তেল আর নারকেল তেল মিক্স করে ব্যবহার করতো। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বক আর চুলের যত্ন নিলে সেটা অনেক বেশি সেইফ ও ইফেক্টিভ। তাই ছোটবেলা থেকে মায়েদের দেখে এসেছি ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করে।

আমন্ড অয়েল নিয়ে জরুরি কিছু কথা–

ত্বকের জন্য আমন্ড অয়েল খুব ভাল। ত্বক খুব তাড়াতাড়ি এই তেল শোষণ করে নেয়।তাই ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েল ব্যবহার হয়ে আসছে। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে দাগহীন, ঝকঝকে উজ্জ্বল ত্বক পাওয়া যায়। স্কিন ক্যাফের সুইট আমন্ড অয়েলে আছে বিশুদ্ধ বাদাম তেল যা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ফ্যাটি এসিডযুক্ত। এছাড়া আছে প্রচুর পরিমানের প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি, ডি এবং ই। স্কিন বেনিফিসিয়াল উপাদান থাকায় আপনার ত্বকেও নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। তাই তো আদিকাল থেকেই ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েল ব্যবহার হগে আসছে।

আমন্ড অয়েলের উপকারীতা:

ক)অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ত্বকের ভাঁজ কমাতে সাহায্য করে। বয়সের ছাপ পরা রোধ করে।

খ)কনুই, ঘাড়, চোখের নিচের কালো দাগ কমাতেও অনেক সাহায্য করে।

গ)মেকআপ উঠানোর জন্যও ব্যবহার করা যায়। কিন্তু পরে ভালো করে ক্লেনজিং করতে হবে।

ঘ)সানবার্ন কমাতে সাহায্য করে।

ঙ)ড্রাই স্কিনের জন্য আমন্ড অয়েল অনেক ভালো কাজ করে, রুক্ষতা কমিয়ে আনে।

চ)হাত ও পায়ের ত্বকের ময়েশ্চার লক করে সফট ও স্মুথ রাখে।

ছ)চুলকানি, র‍্যাশ ও ফোলা ভাব কমায়।

জ)ত্বকের ভেতরে পুষ্টি জোগান দিয়ে ত্বককে ভিতর থেকে উজ্জল করে।

আসুন জেনে নেই রুক্ষ শুষ্ক ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েলের ব্যবহার–

ত্বকের যেকোনো ধরণের সংক্রমণ অর্থাৎ ব্রণ উঠা, এক্নি সমস্যা, সানবার্ণ, ত্বকের র‍্যাশ এই সমস্যা গুলো দেখলে আমরা ত্বকের যত্ন নিতে কতো ছুটাছুটি করি। নামি দামী ক্রিম কিংবা আরো অনেক কিছু ব্যবহার করি। কিন্তু এই সব সমস্যার সমাধানে ছোট একটি উপকারী বন্ধু রয়েছে তা হলো আমন্ড অয়েল। জ্বি হ্যাঁ ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করা হয়। তাই এখন ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েলের ব্যবহার দেখব।

শুষ্ক ত্বকে আমন্ড অয়েল–

  • রুক্ষ শুষ্ক ত্বক বলতেই মনে হয় যেন ত্বকের উপর রোদের খড়াভাব দেখা গেছে। প্রচন্ড তাপে সব ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। আর আমন্ড অয়েল সেই রুক্ষ শুষ্কতা ভাব মিটাতে সাহায্য করে সাথে ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করা হচ্ছে।

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

  1. আমন্ড অয়েল

আপনার ত্বক যদি শুষ্ক, প্রাণহীন আর খসখসে হয়ে যায় তাহলে নিয়মিত বাদাম তেল দিয়ে মুখে মাসাজ করুন। এটি আপনার ত্বককে শুষ্ক হওয়া থেকে বাঁচায়। বিশেষ করে শিতকালে এই তেল ওষুধের মতো কাজ করে।

ডার্ক সার্কালস দূর করতে আমন্ড অয়েল–

  • সারাদিন পরিশ্রম করার জন্য এবং নানারকম স্ট্রেসের কারণে চোখের নিচে ও চারপাশে ডার্ক সার্কল তৈরি হওয়া কোনও নতুন কিছু নয়। এই জাতীয় সমস্যা আমাদের অনেকেরই থাকে। অনেকেই নানা প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন ডার্ক সার্কল থেকে মুক্তি পেতে। কিন্তু অনেক দামি প্রোডাক্ট ব্যবহার করেও যে নিশ্চিতভাবে এই ডার্ক সার্কল থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তা কিন্তু নয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

  1. আমন্ড অয়েল

পরিমাণ মতো আমন্ড অয়েল নিয়ে চোখের নিচে নিয়মিত মালিশ করুন। এই টোটকা ট্রাই করে দেখুন তো। হাতে নাতে ফল পাবেন কথা দিলাম।প্রত্যেক দিন রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে চোখের নিচে নিয়মিত আমন্ড তেল মালিশ করলে ডার্ক সার্কল ধীরে ধীরে কম হয়ে যায়।

সান্সক্রিম হিসেবে আমন্ড অয়েল–

  • অনেকেই হয়তো জানেন না যে আমন্ড অয়েল হল একটি স্বাভাবিক সান্সস্ক্রিম।বাজার চলতি সান্সক্রিমের উপর আপনার যদি ভরসা না থাকে তাহলে চোখ বুজে আমন্ড তেল ব্যবহার করা শুরু করে দিন। বিশেষ করে আপনাকে যদি প্রতিদিন বাড়ির বাইরে বেরোতে হয় তাহলে আমরা পরামর্শ দিচ্ছি আপনি আজ থেকেই এই তেল ব্যবহার শুরু করুন।

প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

  1. আমন্ড অয়েল

বাইরে বের হওয়ার আগে পরিমাণ মতো আমন্ড অয়েল নিয়ে আপনার মুখে ম্যাসাজ করুন।কারণ ট্যানিং দূর করতে আর সানবার্ন কমাতে তো এই তেল কাজে আসেই, উপরন্তু সূর্য রশ্মির বাজে প্রভাব যেমন ধরুন অতিবেগুনি রশ্মির বাজে প্রভাব এই তেল অনেকটা কম করে।

আমরা ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েলের ৩টি সহজ ব্যবহার জানলাম। কিন্তু আমন্ড অয়েল নিয়ে আরো অনেক তথ্য রয়েছে 

ত্বকের জন্য আমন্ড অয়েলের বিকল্প নেই।  এই তেল হাইপোঅ্যালার্জেনিক, তাই শিশুদের ত্বকেও নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়। ত্বক খুব তাড়াতাড়ি এই তেল শোষণ করে নেয়। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে দাগহীন, ঝকঝকে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। আমন্ড অয়েলে প্রচুর ভিটামিন ই থাকে, যার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাব ঠেকাতে সক্ষম। ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ে না। আমন্ড অয়েলের কোলাজেন ত্বকের বলিরেখা ঠেকায় এবং চোখের কোলের ডার্ক সার্কলস ঠেকাতেও তা দারুণ কার্যকর। স্ট্রেচ মার্কসে নিয়মিত আমন্ড তেল লাগানো যায় তা হলে তা ক্রমশ মিলিয়ে যেতে আরম্ভ করে।বাদাম তেল আমাদের ত্বক কোমল ও পেলব করে। আর্দ্রতাকে ত্বকের মধ্যে ধরে রাখে এই তেল। ত্বকে পুষ্টিও যোগায় বাদাম তেল।

পরিশেষে বলব, নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিন। ত্বকের যত্নে আমন্ড অয়েল ব্যবহার করুন।