লঞ্চ ভ্রমণে ঘুরে এলাম ইলিশের জন্য বিখ্যাত চাঁদপুর শহর থেকে

বছরের শেষদিকে এসে ঘুরে এলাম ইলিশের শহর চাঁদপুর থেকে। অনেকদিনের ইচ্ছে ছিলো চাঁদপুর যাওয়ার। সময় সুযোগ মিলে যাওয়ায় একটা ট্রাভেল গ্রুপের সাথে রওনা দিলাম আমরা। লঞ্চ ভ্রমণ, চাঁদপুর বড়স্টেশনের তিন নদীর মোহনা, ইলিশ ভাজা দিয়ে দুপুরের খাবার এবং চাঁদপুরের বিখ্যাত ওয়ান মিনিট আইসক্রীম এক কথায় অসাধারণ একটা ডে ট্যুর। ডে ট্যুর এর জন্য চাঁদপুর একটা ভালো চয়েস।
২৫ ডিসেম্বর সকাল ৮ টার মধ্যে চলে এলাম সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। চারিদিকে মানুষের ভীড়/ব্যস্ততা, হকার কুলিদের হাকডাক, এর মধ্যে আমরা আমাদের নির্ধারিত লঞ্চে উঠি, এম.ভি বোগদাদিয়া ৭ লঞ্চ। লঞ্চে উঠে যে যার মত কেবিন আর ডেক বা বারান্দায় স্থান নিলো। আমরা ডেক টিকেট নেই, কারন অল্প সময়ের যাত্রাটা লঞ্চের ছাদে এবং কেবিনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল।
লঞ্চ ছাড়ার পর আমরা বারান্দায় আর লঞ্চের ছাদে গিয়ে নদীর এবং নদীর পাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে এগিয়ে চললাম। এক সময় আমরা মেঘনা নদীতে আসি। মেঘনা নদীর মাঝ দিয়ে চলতে চলতে আমরা চলে আসি আমাদের গন্তব্যে-চাঁদপুর নদী বন্দর।
➖ ঘাট থেকে নেমে অটো নিয়ে আমরা সরাসরি চলে আসি বিখ্যাত বড় স্টেশনের তিন নদীর মোহনা দেখতে। অটো ভাড়া জন প্রতি ১০ টাকা নিলো। অটো দিয়ে দশ মিনিটের মধ্যে চলে এলাম তিন নদীর মোহনায়।
➖মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল এই বড় স্টেশন। আমরা গেট দিয়ে ঢুকেই দেখতে পেলাম রক্তধারা নামের একটি ভাস্কর্য যা কিনা ১৯৭১ সালের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা এখানে বেশ কিছু সময় কাটাই। উপভোগ করি তিন নদীর অপরুপ সৌন্দর্য। এছাড়াও এখানের ঘাট থেকে ছোট ট্রলার নিয়ে আশেপাশের চর থেকে ঘুরে আসা যায়। তিন নদীর মোহনা জায়গাটা বেশ মন ভালো করে দেয়ার মতই। নদীর সৌন্দর্য সাথে লঞ্চ ট্রলারের শব্দ, ছুটে চলা সব মিলিয়ে খুব ভালো একটা সময় কাটে।
♣️ আমরা তিন নদীর মোহনার সৌন্দর্য উপভোগ করা শেষে অটো নিয়ে শহরের প্রেসক্লাবের এখানে অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্টে চলে আসি, নাম – এলিট চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এ্যান্ড পার্টি সেন্টার। এখানে আমরা চাঁদপুরের বিখ্যাত ইলিশ ভাজা দিয়ে দুপুরের খাবার খাই, সাথে ছিল মুরগি, গরু, খাসীর ব্যবস্থা এবং ভর্তা। এছাড়াও ঘাটের আশেপাশে বেশ কিছু হোটেল আছে যেখান থেকে ইলিশ ভাজা দিয়ে দুপুরের লাঞ্চ করে ফেলা যাবে।
আমরা লাঞ্চের পর চাঁদপুরের বিখ্যাত ওয়ান মিনিট মিনিট আইসক্রিম এর স্বাদ নিলাম। শহরের কালিবাড়ি মোড়ে এটার দোকান রয়েছে। তবে আমরা অনেক বড় গ্রুপ হওয়ায় রেস্টুরেন্টে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়।
♣️ সব কিছুর শেষে আমরা আবার ঘাটে ফিরে আসি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার জন্য। আসার পথেও আমরা বোগদাদিয়া লঞ্চে উঠি। বিকেলের সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে আমরা ঢাকায় ফিরে আসি।