সাইনোসাইটিস কি ??? কেন হয় ???

আজকে আমরা আলোচনা করব সাইনোসাইটিস কি??? কেন হয়??? এবং এর চিকিৎসা কি??

প্রথমে আসা যাক সাইনোসাইটিসকি???

সাইনোসাইটিস অতি পরিচিত একটি সমস্যা। মুখমন্ডলের সামনের দিকে দুই জোড়া বায়ু থলি থাকে এগুলোকে বলা হয় সাইনাস, এই সাইনাসের প্রদাহ বা গ্রুপকে বলা হয় সাইনোসাইটিস।

মাথার খুলিতে অবস্থিত এই সাইনাসের বিভিন্ন কাজ রয়েছে বলা হয়ে থাকে। সাইনোসাইটিস অনেক কারণে হয়ে থাকে। সাধারণত যেসব কারণে হতে পারে সেগুলো হলো,……………

  • নাকের ইনফেকশন হলে।
  • নাকের হাড় বাঁকা হলে।
  • নাকের মাংস ফুলে বড় হয়ে যাওয়া
  • নাকের পলিপ ইত্যাদি।
  • এছাড়া অন্যান্য আরো কারণ রয়েছে। দূষিত পানিতে গোসল করলে, পানি সাইনাসে প্রবেশ করে ইনফেকশন হয়ে সাইনোসাইটিস হতে পারে।
  • আগাতের কারণে সাইনাস উন্মুক্ত হয়ে ইনফেকশন হলেও সাইনোসাইটিস হতে পারে।
  • দাঁতের মাড়ির একদম শক্ত শেষ প্রান্তের দুই দাঁত তুলে ফেলার সময় দাঁতের গোড়া দিয়ে সাইনাস ইনফেকশন হয়ে সাইনোসাইটিস হতে পারে।
  • এছাড়াও ঠান্ডাও ভেজা পরিবেশ, ধোঁয়া, ধুলাবালি, ইত্যাদি পরিবেশ সাইনোসাইটিস এর জন্য দায়ী।

লক্ষণ অর্থাৎ আপনি কিভাবে বুঝবেন আপনি সাইনোসাইটিস রোগে আক্রান্ত………

সাইনোসাইটিসের মূল উপসর্গ হলো,…………

মাথা ব্যাথা। এই মাথা ব্যাথা চোখের নিচে, কপালে থাকে। এছাড়া মুখমণ্ডল ও মাথার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যথা হতে পারে। সাইনাসে ইনফেকশন হয়েছে সে অনুযায়ী অঞ্চল পরিবর্তিত হতে পারে। ব্যথা নাকের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট স্থান থেকে বেরিয়ে আসতে বুঝা  যাবে।

শারীরিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে………

  • শরীর মেজ মেজ করা।
  • জ্বর
  • শরীর ব্যথা ইত্যাদি।

এখন আপনি কিভাবে নির্ণয় করবেন আপনি সাইনোসাইটিসে আক্রান্ত…………

শুধু এক্সরে করে সাইনোসাইটিস সম্পর্কে জানা যায়। সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা উদ্দেশ্য হচ্ছে নাকের মধ্যে সাইনাসের বহির্গমনের পথ গুলো খুলে দেওয়ার মাধ্যমে সাইনাসের বহির্গমন পথকে সুগম করে দেওয়া।  রোগীর ঘনঘন ঠান্ডা লাগার প্রবণতা দূর করা।

সাইনোসাইটিসের লক্ষণ এবং সাইনোসাইটিস কাকে বলে এই বিষয়ে আমরা একটু আগে আলোচনা করেছি, এখন আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করব সাইনোসাইটিস সমস্যা থেকে কিভাবে আপনারা পরিত্রান করতে পারবেন নিজেদেরকে…………

  • কাঁচা সবজির জুস, সাইনোসাইটিস এর প্রভাব কমানোর জন্য অনেক উপকারী। ৩০ মিলি লিটার গাজরের জুস,২০০ মিলি পালংশাক ভালোভাবে মিশিয়ে প্রতিদিন পান করুন।
  • সাইনোসাইটিস হলে ভিটামিন এ যুক্ত খাবার যেমন ডিমের হলুদ অংশ, পেঁপে, গাজর, দুধ খাবার চেষ্টা করুন।
  • ১০০ গ্রাম জিরা পানির সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন সেবন করুন। এটি সাইনোসাইটিস প্রতিরোধের অন্যতম উপায়।
  • এছাড়া ১ টেবিল-চামচ কালোজিরা একটা পাতলা কাপড় এ বেঁধে নিয়ে তার গন্ধ শুঁকে নিতে পারেন। এটাও সাইনোসাইটিস প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
  • এছাড়াও আপনারা যদি চান ১ টেবিল চামচ মেথি একগ্লাস পানিতে জ্বাল দিয়ে নিয়ে নিবেন যতক্ষণ না পানি অর্ধেক হয়ে যায় এরপরে এভাবে আপনি এই পানিটি প্রতিদিন তিন থেকে চার বার করে খাবেন। এটা আপনার সাইনোসাইটিসের সমস্যাকে অনেক কমিয়ে দেবে।
  • এছাড়াও আপনারা চাইলে পেঁয়াজ এবং আধার গন্ধ শুঁকে নিতে পারেন। সেটা অনেক উপকারী।
  • আদা অথবা দারুচিনির চা খেতে পারেন। ঠান্ডা জাতীয় খাবার পরিহার করবেন এবং সরাসরি ফ্রিজেন করা খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • শুনে হয়তো অবাক হবেন যে ব্যায়ামের মাধ্যমে সাইনোসাইটিস এর প্রভাব কমিয়ে আনা যায়। ব্যায়াম করার ফলে শরীরে আপনার বেড়ে যাওয়া সাইনোসাইটিসের টিস্যুকে কমিয়ে দেয়
  • আমরা সবাই কমবেশি ভিনেগার এর সাথে পরিচিত এই ভিনেগার আমাদেরকে সাইনোসাইটিস থেকে মুক্তি দান করে।  হালকা গরম পানিতে ২ চামচ ভিনেগার দিয়ে প্রতিদিন তিনবার সেবন করুন।

বন্ধুরা এতক্ষণ আপনাদের যা বললাম এই সকল ঘরোয়া পদ্ধতি যদি আপনারা ব্যবহার করেন খুব সহজে নিজেকে সাইনোসাইটিস থেকে ভালো রাখতে পারবেন। এ ধরনের ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করার পরেও যদি আপনার সাইনোসাইটিসের সমস্যা না কমে তাহলে আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।  ধন্যবাদ।