ত্বকের সম্পূর্ণ যত্ন নিতে হলুদের সেরা কিছু ফেইসপ্যাক ও ফেইসমাস্ক

প্রাচীনকাল থেকেই আমরা হলুদ গুড়োর ব্যবহার সম্পর্কে জেনে এসেছি অর্থাৎ রূপচর্চায় হলুদ কত ভাবে কাজ করে সেটা আমরা জেনে এসেছি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই হলুদ গুড়োর ব্যবহার যেন সবদিক দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে। আজ ত্বকের সম্পূর্ণ যত্ন নিতে হলুদ গুঁড়ো কিভাবে ব্যবহার করা যায় তা  নিয়ে আলোচনা করা হবে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় যারা জড়িত তারা বিভিন্নভাবে এই হলুদ গুঁড়ো কে ব্যবহার করে নিজেদের সমস্যা দূর করে ত্বকের যত্ন নিতে পারছে। আগেকার দিনে সবাই হলুদ বেটে মুখে সরাসরি লাগাত। এতে করে অনেক সমস্যা দেখা দিত যাদের মুখে ব্রণ বা অ্যালার্জি রয়েছে তারা সরাসরি হলুদ দিলে হিতে বিপরীত হয়ে যেত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই ধারণাগুলো পাল্টে যাচ্ছে। অনেকে হলুদের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন হয়ে গেছে। কিভাবে হলুদ গুঁড়ো ব্যবহার করে আমাদের নির্দিষ্ট সমস্যাগুলো দূর করা যায় আজকে সেই বিষয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো।

এই প্যাকগুলো বিশেষ করে ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্য। তাই সব ধরনের মানুষ সচেতন ভাবেই এই প্যাকগুলো ব্যবহার করতে পারবেন ও ফলাফল দেখে নিতে পারবেন।

১। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে হলুদের ফেইসপ্যাকঃ

  • এই প্যাকটি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের দাগ থেকে আমরা দূরে থাকতে পারব।
  • বন্ধুরা ব্যস্ত জীবনে ধুলাবালি আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। পাশাপাশি রোদে পোড়া দাগ ও আছে। আর সেই সাথে যদি হয় গ্রীষ্মকাল সব মিলিয়ে যেন ত্বকের উপর একটা খিচুড়ি পেকে যায়। এই খিচুড়ি সমস্যা আমাদের ত্বক কে অন্য ধরনের সমস্যায় ফেলে।
  • এই ধরনের সমস্যা দূর করার জন্য আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি হলুদের এই চমৎকার ফেইসপ্যাক।
  • সব ধরনের ত্বকের অধিকারী মানুষেরা এই প্যাক টি ব্যবহার করতে পারবেন।

এ প্যাকটি তৈরি করতে কি কি উপকরণ লাগবে…..

২ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা।

  • ১ চা চামচ অলিভ অয়েল।
  • ২ চা চামচ চালের গুড়া।
  • ১ চা চামচ দুধ।

ব্যবহার প্রণালিঃ

  • উপকরণ গুলো একসাথে ব্লেন্ড করে আমাদের ত্বকে লাগাতে হবে।
  • ২০ মিনিট সময় মত লাগানোর পর ধুয়ে ফেলতে হবে। চমৎকার একটি ফলাফল আপনি নিজের চোখেই দেখবেন। 

২। ত্বক থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্ল্যাকহেডস হোয়াইটহেডস দূর করতে হলুদের ফেইসপ্যাকঃ

  • এই প্যাকটি আমাদের ত্বক থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস দূর করার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করে।
  • পাশাপাশি ত্বকের যত্ন নিয়ে থাকে।

এই প্যাকটি তৈরি করতে কি কি উপকরণ লাগে…..

  • ২ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা।
  • ১ চা চামচ টক দই,
  • ২ চা চামচ মিষ্টিকুমড়ার পেস্ট।

ব্যবহার পদ্ধতিঃ

  • উপকরণ গুলো একসাথে তৈরি করলে আমাদের এই প্যাকটি তৈরি হয়ে যাবে।
  • এটি ত্বকের ওপর লাগানোর ২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • উপকরণ গুলো একটি কিন্তু দারুণ ভাবে কাজ করে শরীরের যত্ন নিতে।
  • এটি নিয়মিত ব্যবহার করা উচিত।

৩। ত্বকের বিভিন্ন ধরনের বলিরেখা দীর্ঘস্থায়ী দাগ দূর করতে হলুদের ফেইসমাস্কঃ

  • ত্বকের সম্পূর্ণ যত্ন নিতে, ত্বকের বিভিন্ন ধরনের বলিরেখা ও দীর্ঘস্থায়ী দাগ দূর করে আমাদের ত্বককে উজ্জ্বল ও সুন্দর করে দেয় এই ফেইসমাস্ক টি।

এটি তৈরি করতে যে সকল উপকরণ গুলো লাগবে………

  • ২ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা।
  • ২ চা চামচ কমলার রস।
  • ১ চা চামচ কফি পাউডার।
  • ১ চা চামচ মধু।
  • ২ চা চামচ চালের গুড়া।

ব্যবহার প্রণালিঃ

  • উপকরণ গুলো একসাথে করে ফেইসমাস্ক টি তৈরি করে ফেলতে হবে।
  • এটি আমাদের পুরো ত্বকে ম্যাসাজ করে লাগাতে হবে।
  • এটি ভালোমতো মুখে লাগানোর পর শরীরে কোন ধরনের সমস্যা আর থাকবে বলে মনে হয় না।
  • ত্বকের সম্পূর্ণ যত্ন নিতে এই প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহার করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। আর শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের দাগ ছোপ দূর করে ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল করুন।

৪।মুখের ত্বকে গোলাপি আভা আনতে হলুদের ফেইসমাস্কঃ

  • এই প্যাকটি ব্যবহারে আমাদের ত্বকে একটি গোলাপি আভা চলে আসে।
  • পাশাপাশি আমাদের ত্বকের উপর যে লোমগুলো থাকে সেগুলো গোল্ডেন কালার হয়ে যায়।

এই প্যাকটি তৈরি করতে যে সকল উপকরণ লাগবে…………

  • ২ চা চামচ কাঁচা হলুদ বাটা।
  • ২ চা চামচ দুধ।
  • ১ টেবিল চামচ চাল ধোয়া পানি।
  • ২ চা চামচ গোলাপের পাপড়ি গুড়ো।
  • ২ চা চামচ ডালের পেস্ট।

ব্যবহার প্রণালিঃ

  • ত্বকের সম্পূর্ণ যত্ন নিতে এই উপকরণ গুলো একসাথে মিক্স করে আমাদের ত্বকে প্রতিদিন গোসলের আগে লাগিয়ে রাখার পর গোসল করে ফেললে বন্ধুরা অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
  • ত্বক এতো সুন্দর নরম হয়ে যায় যে আপনি ভাবতে ও পারবেন না।

বন্ধুরা উপরে যে ফেইসপ্যাক ও ফেইসমাস্ক গুলোর কথা বললাম,এগুলো কিন্তু দারুণ কার্যকরী। এই প্যাকগুলো ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ত্বকের সম্পূর্ণ যত্ন আপনারা নিতে পারেন।

নোটঃ কাঁচা হলুদের তৈরি বাজারে যে সকল ফেইসমাক্স পাওয়া যায় তার চেয়ে হাজারগুন ভালো হয় যদি সেটা ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন।